রবিবার দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতের মহারাষ্ট্রে ফিরে আসা এক ব্যক্তি করোনাভাইরাস পজিটিভ হন। আর এর পরই ভারত সরকার বাংলাদেশসহ প্রায় অনেকগুলো দেশকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ তালিকাভুক্ত করার বিষয়ে নতুন নির্দেশিকা জারি করে।
হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, ওই রোগী কভিড-১৯-এর ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট বহন করছিল কি-না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নতুন নির্দেশিকা অনুসারে যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের সব দেশ এবং সেই সঙ্গে অন্য ১১টি দেশ- বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, বতসোয়ানা, চীন, মরিশাস, নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, সিঙ্গাপুর, হংকং এবং ইসরায়েল ভারতের জন্য ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ দেশ হিসেবে নতুনভাবে তালিকাভুক্ত হলো।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা সংশোধিত নির্দেশিকা অনুসারে- ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ দেশগুলো থেকে ভ্রমণকারী বা ট্রানজিট করা যাত্রীদের ভারতে পৌঁছানোর সময় একটি আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করতে হবে এবং বিমানবন্দর ত্যাগ করার আগে বা সংযোগকারী ফ্লাইট ওঠার আগে ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
যে সমস্ত ভ্রমণকারীরা পজিটিভ হবেন তাদের আইসোলেশনে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হবে। তাদের কেউ যদি ওমিক্রন ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত হন তবে ‘নেগেটিভ’ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান করতে হবে। যদি তারা অন্য কোনো ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত হন, তবে চিকিৎসকের বিবেচনার ভিত্তিতে তাদের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নির্দেশিকা আরো বলেছে, তালিকাভুক্ত দেশগুলো থেকে আসার পরে যারা নেগেটিভ হবেন তাদেরও হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে এবং অষ্টম দিনে আরেকটি পরীক্ষা করতে হবে। যদি তখন তারা পজিটিভ হন, তবে তাদের কভিড-১৯ হেল্পলাইনে রিপোর্ট করতে হবে। তাদের গত ১৪ দিনের ভ্রমণের ইতিহাসও জানাতে হবে।
এর আগে শনিবার, বিশ্বের দ্বিতীয় মহামারি আক্রান্ত দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নতুন ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট নিয়ে উদ্বেগ বাড়ার সাথে সাথে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাগুলো সহজ করার পরিকল্পনা পর্যালোচনা করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
২০ মাসেরও বেশি সময় বিরতির পর ভারত সরকার ১৫ ডিসেম্বর থেকে নির্ধারিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক ফ্লাইটগুলো পুনরায় চালু করার ঘোষণা দেয়। দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বায়ো-বাবল ব্যবস্থার অধীনে ফ্লাইটগুলো বর্তমানে চলছে।
নতুন করোনা ভেরিয়েন্টটি প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হয় এবং তারপর এটি বেশ কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
রবিবার পর্যন্ত অন্তত ৯টি দেশ ‘সুপার মিউটেটেড স্ট্রেইন’ শনাক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসের বি.১.১.৫২৯ রূপটিকে ‘উদ্বেগজনক ভেরিয়েন্ট’ হিসাবে আখ্যা দেয়।
বিশ্বব্যাপী সরকারগুলো নতুন ওমিক্রন নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য পরিষেবা অধিদপ্তরও (ডিজিএইচএস) রবিবার ভেরিয়েন্ট নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধের জন্য একটি নির্দেশিকা ঘোষণা করেছে।
সূত্র : দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড