৩৪ বছর বয়স থেকে আমার জীবন শুরু হয়েছে - বাঁধন

৩৪ বছর বয়স থেকে আমার জীবন শুরু হয়েছে – বাঁধন

বিনোদন
আজমেরী হক বাঁধন। ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সিনেমার মাধ্যমে কান চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিয়ে ফিরেছেন কদিন আগে। সেই সফলতার রেশ না কাটতে সম্প্রতি বলিউড নির্মাতা বিশাল ভরদ্বাজের ‘খুফিয়া’ সিনেমার শুটিংও করেছেন। ৭ দিনের শুটিং শেষে বর্তমানে ঢাকা অবস্থান করছেন বাঁধন। এদিকে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ আগামী ১২ নভেম্বর দেশের হলে মুক্তি পাচ্ছে। সবমিলিয়ে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সুসসময় পার করছেন এ অভিনেত্রী।

কানে অংশ নেয়া ও বলিউডে কাজের পর প্রতিক্রিয়া কেমন মিলছে? বাঁধন বলেন, আমাকে সবাই যখন বলে, বাঁধন তোমার এতো এতো এচিভমেন্ট। তুমি কানে চলে গেছ, বিশাল ভরদ্বাজের কাজ করছো।তোমাকে নিয়ে এতো আলোচনা হচ্ছে। এতো বড় একটা অ্যাওয়ার্ডের জন্য নমিনেশন পেয়েছ। এত সব কিছুর মধ্যে আমার কাছে বড় প্রশান্তি বা অর্জনের জায়গা হচ্ছে, আমার মেয়ে আমাকে হেরে যেতে দেখছে না। এটা আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। কানে অংশ নেয়ার পর আপনার মেয়ের রিঅ্যাকশন কেমন ছিল?

এ অভিনেত্রী বলেন, আমার মেয়ে আমাকে বলেছে, মা ইউ আর রক। তুমি তো একটা ইন্টারন্যাশনাল সেলিব্রেটি হয়ে গেলা। সারাক্ষণ তোমাকে নিউজে দেখাচ্ছে, জানো! ওখানে থাকা অবস্থায় আমার মেয়ের সঙ্গে কথাও বলতে পারিনি। তবে যতটুকু সময় পেয়েছি ওর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি। ও খুব মজা পেয়েছে। যতদূর জানি, ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সিনেমার শুটিংয়ের সময় আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। এই সিনেমার পেছনের জার্নিটা জানতে চাই।

বাঁধন বলেন, দেড় বছরের একটা জার্নি। আমার জার্নিটা অনেক পেইনফুল ছিল। আমার গুণ, ক্ষতগুলো রি-ওপেন করতে হয়েছে। উদাহরণ স্বরুপ সাড়ে ৫ মিনিটের একটা দৃশ্য ছিল, যেটা আমরা ৬৭ বার টেক দিয়েছিলাম। সাদকে (‘রেহানা মরিয়ম নূর’র পরিচালক) সেটিসফাইড করা যায় না। তার চাওয়া হলো, অভিনয়টা অনেক রিয়েলেস্টিক হতে হবে। সত্যি কথা বলতে, রেহানা থেকে এখনও বের হতে পারিনি। এটা কোনো নারীর গল্প না। সিনেমাটা দেখলে আপনারাও বুঝতে পারবেন। ‘খুফিয়া’র শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? বাঁধন বলেন, ‘খুফিয়া’য় খুবই ছোট একটা চরিত্র করছি।

সিনেমাটির জন্য আমার ডেট নেয়া আছে ১০ দিন। তারমধ্যে ৭ দিনের শুট হয়েছে। দিল্লির অংশটা হয়ে গেছে। মুম্বইয়ের অংশ হবে ফেব্রুয়ারিতে। ৭ দিনের কাজের অভিজ্ঞতা এক কথায় অসাধারণ। এতো প্রত্যাশা নিয়ে যাইনি আসলে। কারণ একে তো আমি বাংলাদেশ থেকে যাওয়া শিল্পী। তারপর এতো বড় একজন পরিচালক বিশাল ভরদ্বাজ। সব চাইতে বড় কথা টাবুর মতো এতো বড় একজন সহশিল্পী। উনি আমাকে কীভাবে নেবেন এটা আমার জন্য ভয়ের ছিল। কিন্তু আমি যেদিন গেলাম পরিচালক আমাকে নিজে রিসিভ করেন। আমাদের টেবিল ট্রেনিং ছিল। পরিচালক সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন নিজে সাথে করে নিয়ে।

ডিরেক্টর যখন একজন শিল্পীকে সম্মান দিবে তখন কাজ করাটা খুব সহজ হয়। বিশাল ভরদ্বাজ আমার মনটা নিয়ে নিয়েছে। ‘খুফিয়া’র চিত্রনাট্যে বাংলাদেশকে ছোট করার একটা অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী? এ অভিনেত্রী বলেন, কে কি বলেছে, কার কী অভিযোগ, এটা নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। অবশ্যই সব পছন্দ হয়েছে বলেই কাজ করেছি। বিশাল ভরদ্বাজের সঙ্গে কাজ করার একটা ভালো সুযোগ ছিল। সেটাই কাজে লাগাতে চেয়েছি। আর কিছু না।

এবার একটু ব্যক্তিগত প্রশ্ন। এতো সফলতার পর কেউ কি আপনাকে বিয়ের বা প্রেমের ইঙ্গিত দেননি? বাঁধন বলেন, আমি যে মানসিক অবস্থায় আছি, সেখান থেকে আমার জন্য এটা কঠিন। আমকে নিতে পারাও আমাদের দেশের পুরুষদের জন্য কঠিন হবে। তাই এখন আমি ফোকাস করতে চাই কাজে। কারণ আমার মনে হয়, আমি জীবনই শুরু করেছি মাত্র চার বছর হলো, ৩৪ বছর বয়স থেকে জীবনটা শুরু হয়েছে। এখন আমার ৩৮।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *