ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)- বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। আদৌ ক্রিকেটটাকে কি ঠিকঠাক নিয়ন্ত্রণ করছে আইসিসি? সংশয় প্রকাশ করেছেন ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার ও সাবেক ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার মাইকেল হোল্ডিং।
হোল্ডিংয়ে সংশয়ের কারণটাও যৌক্তিক। ক্রিকেটের প্রসারের চেয়ে যেন প্রচারই হচ্ছে বেশি, যেখানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চেয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টগুলো বেশি শক্তি প্রদর্শন করছে। ক্রিকেটাররাও জাতীয় দলের খেলা ছেড়ে বিভিন্ন লীগেই আগ্রহ দেখান বেশি। তার ওপর ক্রিকেট বোর্ডগুলো মধ্যে তো কোন্দল রয়েছেই। সার্বিক দিক বিবেচনায় ক্রিকেট আর আগের মতো নেই বলে মন্তব্য হোল্ডিংয়ের।
৬৭ বছর বয়সী হোল্ডিং খেলোয়াড়ী জীবন শেষে দীর্ঘ সময় ধারাভাষ্যকার হিসেবে ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। অবশেষে ৩১ বছরের কমেন্টেটরের দায়িত্বের ইতি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হোল্ডিং।
বিদায় বেলায় এসে এক সাক্ষাৎকারে ক্রিকেট পরিচালকদের নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন হোল্ডিং। তিনি বলেন, ‘যারা ক্রিকেট পরিচালনা করছে (আইসিসির কর্মকর্তারা) তাদের নিয়ে আমি খুবই হতাশ। আমি তাদের কখনোই মিস করবো না।’
ক্যারিয়ারের শুরুতে আইসিসির পরিচালনা পর্ষদে যে কর্মকর্তারা ছিলেন তাদের ভূয়সী প্রশংসা করে হোল্ডিং বলেন, ‘আমি যে মহান মানুষদের সঙ্গে কাজ করতাম, যাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়েছিলাম তাদেরকে মিস করবো। কিন্তু আমি ক্রিকেটকে মিস করবো না। কারণ আমি যখন খেলা শুরু করেছিলাম, যে ক্রিকেটকে চিনতাম, সেই ক্রিকেট থেকে এখনেরটা ভিন্ন।’
ইংল্যান্ডের পাকিস্তান সফর বাতিলের ঘটনায়ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন হোল্ডিং। তার দাবি, ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) সহজেই পাকিস্তানের সঙ্গে এমন আচরণ করলেও ভারতের সঙ্গে কখনোই তা করতে পারতো না। হোল্ডিং বলেন, ‘ইংল্যান্ড পাকিস্তানের সঙ্গে যে কাজটি করলো, আমি নিশ্চিত ভারতের সঙ্গে ইংল্যান্ড সে কাজ করতে পারতো না। কারণ ভারত ধনী ও শক্তিশালী।’
গত বছর ভরা করোনার মধ্যেই ইংল্যান্ড সফরে গিয়েছিল পাকিস্তান। যা ইসিবির আর্থিক ফায়দার কারণ ছিল। কিন্তু পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) দুঃসময়ে ইসিবিকে পাশে পায়নি তারা। এ নিয়ে পিসিবির সভাপতি রমিজ রাজাও হতাশা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘ইংল্যান্ড সফর বাতিল করায় অবশ্যই আমরা হতাশ। বিপদের সময় এই সিরিজটি হতে পারতো এক বোর্ড অপর বোর্ডকে সাহায্য করার মাধ্যম।’
হোল্ডিংয়ের গলায়ও একই সুর, ‘যখন ভ্যাকসিন ছিল না, সেসময় পাকিস্তান ইংল্যান্ড সফর করেছে। সেখানে তারা ছয় অথবা সাত সপ্তাহ অবস্থান করেছে। ক্রিকেট খেলেছে। তারা ইংল্যান্ড বোর্ডকে সম্মান জানিয়েছে। ইসিবিরও উচিত ছিল এখন পিসিবিকে সম্মান দেখানো।’