জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেছেন, কোনো বিশেষ ধর্ম বা জাতীয়তার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদকে যুক্ত করার যে কোনো প্রচেষ্টাকেই বাংলাদেশ প্রত্যাখ্যান করে ও তীব্র নিন্দা জানায়। সন্ত্রাসবাদকে কোনো ধর্ম, জাতি, বিশ্বাস, সংস্কৃতি, নৃগোষ্ঠী বা সমাজের সঙ্গে যুক্ত করা উচিত নয়।
জাতিসংঘ সদর দফতরে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের আলোচনাসভায় দেওয়া বক্তৃতায় এই আহ্বান জানান তিনি।
আজ বুধবার (৬ অক্টোবর) জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, সন্ত্রাসবাদকে কোনো ধর্ম, জাতি, বিশ্বাস, সংস্কৃতি, নৃগোষ্ঠী বা সমাজের সঙ্গে যুক্ত করা উচিত নয়। কোনো বিশেষ ধর্ম বা জাতীয়তার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদকে যুক্ত করার যে কোনো প্রচেষ্টাকেই বাংলাদেশ প্রত্যাখ্যান করে ও তীব্র নিন্দা জানায়।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা তাঁর বক্তব্যে সন্ত্রাসবাদ ও এর যে কোনো রূপ বা ধরনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জিরো টলারেন্স নীতির পুনরাবৃত্তি করেন। সন্ত্রাসবাদ, সহিংস চরমপন্থা, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন ও এ সংশ্লিষ্ট যে কোনো হুমকি প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার যে সব আইনি ও নীতিগত পদক্ষেপ নিয়েছে এবং বাস্তবায়ন করেছে তা তুলে ধরেন তিনি।
এছাড়া বাংলাদেশ সরকার সহিংস উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের হুমকি মোকাবেলায় দেশের সক্ষমতাকে আরো সুদৃঢ় করতে জাতিসংঘ সংস্থাসমূহ, দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন অংশীদার ও সিভিল সোসাইটি সংস্থার সঙ্গে নিবিড় অংশীদারত্ব বজায় রেখে কাজ করে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত।
বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের ওপর করোনার প্রভাবের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, করোনা মহামারি সন্ত্রাস প্রতিরোধ এবং সন্ত্রাসবিরোধী জাতীয় ও বৈশ্বিক প্রচেষ্টাগুলোকে ব্যাহত করেছে। এ ক্ষেত্রে তিনি বৈশ্বিকভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থিতিশীল পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টার পাশাপাশি সক্ষমতা বিনির্মাণ, গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়, নারী ও যুবদের ক্ষমতায়ন, অনলাইন প্লাটফর্মে সৃষ্ট ঘৃণ্য বক্তব্য, জাতিগত বিদ্বেষ ও উদ্দেশ্যমূলক তথ্য-বিভ্রান্তির বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার ক্ষেত্রে শিক্ষা ও সমাজে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ বিনির্মাণ তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।
সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থার লিঙ্গগত দিকগুলো তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা নারীদের ওপর সন্ত্রাসের অসম প্রভাবের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি লিঙ্গসমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি ‘নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা এজেন্ডা’র পূর্ণ ও কার্যকর বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
সন্ত্রাসবাদ ও এর যে কোনো রূপ বা ধরন মোকাবেলায় গৃহীত সব ধরনের আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় সুদৃঢ় ও নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের যে দৃঢ় অঙ্গীকার রয়েছে তা পুনরুল্লেখ করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।