তালেবানদের বিচ্ছিন্ন করার বিরুদ্ধে সতর্ক করলো কাতার

তালেবানদের বিচ্ছিন্ন করার বিরুদ্ধে সতর্ক করলো কাতার

আন্তর্জাতিক
অনেক শর্তের জালে তালেবানদেরকে কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে ফেলার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে কাতার। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি বলেছেন অতিরিক্ত শর্ত দিলে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণে থাকা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়টি বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে রাখলে তাতে আফগানিস্তানে অনিশ্চয়তা আরো বৃদ্ধি পাবে।

মঙ্গলবার তিনি বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বান জানান আফগানিস্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। উদ্বেগ প্রকাশ করেন দেশটির আর্থ সামাজিক অবস্থা নিয়ে। এ খবর দিয়েছে তুরস্কের অনলাইন টিআরটি।
তালেবানদের সঙ্গে মধ্যস্থতার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ দোহা। ২০১৩ সাল থেকে তালেবানদের রাজনৈতিক অফিস দোহা’য় পরিচালনার সুযোগ দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাস’কে পাশে রেখে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ তালেবান প্রসঙ্গে বলেন, যদি আমরা শর্ত দেয়া শুরু করি এবং (তালেবানদের সঙ্গে) আমাদের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই, তাহলে আফগানিস্তানে একটি শূন্যস্থান সৃষ্টি হবে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই শূন্যতা পূরণ করবে কে?
১৪ই আগস্ট কাবুল দখল করার পর এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানের সরকার হিসেবে তালেবানদেরকে কোনো দেশই স্বীকৃতি দেয়নি। পশ্চিমা অনেক দেশ তালেবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সবার অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠনের জন্য। তাতে থাকবে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধি এবং সেই সরকারকে মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হবে।

তালেবানদেরকে সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া অগ্রাধিকার নয়- এ কথা স্বীকার করে শেখ মোহাম্মদ বলেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া আমি বিশ্বাস করি নিরাপত্তায় এবং আর্থ সামাজিক দিক দিয়ে বাস্তব অগ্রগতিতে পৌঁছা যাবে না। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাস। তিনি বলেন, আফগানিস্তানকে সাহায্য করতে চায় বার্লিন।

কিন্তু আন্তর্জাতিক সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু পূর্বশর্ত আছে। তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, তালেবানদের সঙ্গে কথা বলা ছাড়া কোনো উপায়ই নেই। কারণ, আমরা আফগানিস্তানকে অস্থিতিশীল হতে দিতে পারি না। দেশটি অস্থিতিশীল হলে তাতে সন্ত্রাসের জন্য সহায়ক হবে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়ে ভাবছি না। তবে বিদ্যমান সমস্যাগুলো কিভাবে সমাধান করা যায় তা নিয়ে ভাবছি। ভাবছি আফগানিস্তান এবং জার্মান নাগরিকদের নিয়ে। স্থানীয় যেসব স্টাফ ছিলেন তাদেরকে নিয়ে ভাবছি।

তালেবানরা এর আগেই পূর্বের সরকারের সদস্য এবং নাগরিক সমাজের সঙ্গে আলোচনা করেছে। এরপর তারা বলেছে, শিগগিরই একটি পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রীপরিষদের ঘোষণা দেবে। কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বলেছেন, সবার অংশগ্রহণমূলক একটি সরকার গঠনের ধারণার প্রতি তালেবানরা উন্মুক্ত। তারা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, নারীর অধিকার, তাদের শিক্ষা ও কাজ করার অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর কথা বলেছে। শেখ মোহাম্মদ আরো বলেন, গত ২০ বছর তালেবানদেরকে বিচ্ছিন্ন করে রাখায় বর্তমান পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে আফগানিস্তানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *