যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, প্রয়োজনে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ডেডলাইন পার হলেও আফগানিস্তানে অবস্থান করা দেশটির সব নাগরিককে ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত কাবুলে থাকবে সৈন্যরা।বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে জো বাইডেন ঘোষণা দিয়েছিলেন, এই মাসের ৩১ তারিখের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার করা হবে। এবিসি নিউজকে সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেন, ‘যদি কোনো মার্কিন নাগরিক থেকে যায়, আমরা তাদের বের করে নিয়ে আসা পর্যন্ত থাকবো।’
বাইডেন জানান, ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার মার্কিন নাগরিকের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সাথে কাজ করা ৫০ হাজার থেকে ৬৫ হাজার আফগানকে দেশটি থেকে বের করে আনা প্রয়োজন। এই বিপুল লোককে আফগানিস্তান থেকে বের করে আনতে বর্তমানে কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরে চার হাজার পাঁচ শ’ মার্কিন সৈন্য মোতায়েন রয়েছে।
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার জেরে আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালায় যুক্তরাষ্ট্র। অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রসজ্জ্বিত মার্কিন বাহিনীর হামলার মুখে দেশটিতে তৎকালীন ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার পিছু হটতে বাধ্য হয়। তবে একটানা দুই দশক আফগানিস্তানে যুদ্ধ চলতে থাকে।
দীর্ঘ দুই দশক আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের পর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাতারের দোহায় এক শান্তিচুক্তির মাধ্যমে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করতে সম্মত হয় যুক্তরাষ্ট্র। এর বিপরীতে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অংশ নিতে তালেবান সম্মত হয়।
এই বছরের মে মাসে সৈন্য প্রত্যাহারের কথা থাকলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এপ্রিলে এক ঘোষণায় ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সৈন্য প্রত্যাহারের কথা জানান। পরে জুলাই সময়সীমা আরো কমিয়ে এনে ৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন তিনি।
মার্কিনিদের সাথে চুক্তি অনুসারে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারের সাথে তালেবানের সমঝোতায় আসার কথা থাকলে কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি দুই পক্ষ। সমঝোতায় না পৌঁছানোর জেরে তালেবান আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণে অভিযান শুরু করে।
৬ আগস্ট প্রথম প্রাদেশিক রাজধানী হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলীয় নিমরোজ প্রদেশের রাজধানী যারানজ দখল করে তারা। যারানজ নিয়ন্ত্রণে নেয়ার ১০ দিনের মাথায় রোববার কাবুল দখল করে তালেবান যোদ্ধারা।
সূত্র : বিবিসি