ঈদের আনন্দ পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পথে পথে ভোগান্তি আর দীর্ঘ যানজট অপেক্ষা করে গ্রামে ছুটছে শহর ও কর্মস্থলের মানুষ। তবে এর মধ্যে রয়েছে রাজধানীতে ফেরার অনিশ্চয়তা। গত বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীর বাসস্ট্যান্ড গুলোতে দিনে রাতে একই চিত্র। অনেকে আবার বলছেন, ঈদ-পরবর্তী বিধিনিষেধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা ঢাকায় আসবেন না। ঈদের পরে যখন অফিস খুলবে খবর পেলেই তখন ঢাকায় আসবেন।
সেক্ষেত্রে ঢাকায় এসে চাকরি ফিরে পাওয়ার একটা অনিশ্চয়তাও রয়ে গেছে। এমন অনেকেই ঢাকা ছাড়ছেন পরিবার-পরিজনদের সাথে ঈদ করতে কিন্তু তাদের সে ঘরে ফেরাটা একেবারেই অন্যরকম। কারণ তারা অনেকেই ছিলেন ঢাকায় চাকরি প্রত্যাশী এবং শিক্ষার্থী। নির্মাণ কাজের সাথে যেসব শ্রমিক জড়িত ছিলেন তারাও বাড়ি ফিরছেন।
এদিকে, দেশের দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার ঘরমুখো মানুষের উপস্থিতিতে আজও মুখরিত মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়াঘাট। শনিবার সকাল থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছোট-বড় যানবাহনে চড়ে যাত্রীরা ঘাটে উপস্থিত হয়ে ফেরি ও লঞ্চে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে। ফেরিঘাটে যানবাহন আর লঞ্চঘাটে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে যাত্রীর চাপ। বিশেষ করে লঞ্চঘাটে সকাল থেকেই যাত্রীদের গাদাগাদি। লঞ্চে মানা হচ্ছে না নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি। অর্ধেক যাত্রী ধারণের কথা থাকলেও অধিক যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি সামাজিক দূরত্ব।
অন্যদিকে, গণপরিবহণ ও ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ বাড়ায় ফেরিতে যানবাহন পারাপারে বেগ পেতে হচ্ছে। শিমুলিয়াঘাটের অভিমুখে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের প্রায় সাত কিলোমিটার এলাকায় পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি। ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় অবস্থান করছে ছয় শতাধিক ব্যক্তিগত গাড়ি ও পণ্যবাহী ট্রাক।
ঘাট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, যানবাহন ও যাত্রী পারাপারে নৌরুটে বর্তমানে ১৩টি ফেরি এবং ৮৩টি লঞ্চ সচল রয়েছে।
অন্যদিকে, গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে সকাল থেকে বাড়ছে যানবাহনের চাপ। এ কারণে আজ সকাল থেকেই টঙ্গী থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত থেমে থেমে চলছে গাড়ি। একই অবস্থা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায়। দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা। দূরপাল্লার যানবাহনে অনেকটা স্বাস্থ্যবিধি মানলেও উল্টো চিত্র ছোট ছোট যানবাহনে।
দীর্ঘ লকডাউনের পর ছুটি হওয়ায় এবার রাস্তায় মানুষ বেশি থাকবে, তাই তাদের নিরাপত্তাসহ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে মাঠে কাজ করছে বলে জানিয়েছে গাজীপুর ট্রাফিক বিভাগ।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজট না থাকলেও যানবাহনে চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। যার কারণে কয়েকটি পয়েন্টে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তবে কালিয়াকৈর-নবীনগর সড়কের চন্দ্রার পর জিরানী থেকে ইপিজেড পর্যন্ত যানজট থাকায় মাঝেমধ্যেই সেই যানজট দীর্ঘ হয়ে চন্দ্রা ত্রিমোড় পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে।