বিশ্ব শান্তির সেফগার্ড হিসেবে, বিশ্ব অর্থনৈতিক উন্নয়নে চীনের অবদানকে সমর্থন করে পাকিস্তান। এ ঘোষণা আবারও দিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, পাকিস্তান ও চীন একে অপরের সঙ্গে ‘আয়রন ব্রাদার্স’ বা লৌহকঠিন বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ। কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না (সিপিসি) এবং ওয়ার্ল্ড পলিটিক্যাল পার্টিজ সামিটে মঙ্গলবার বক্তব্য রাখেন ইমরান খান।
তিনি বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) মাধ্যমে সমৃদ্ধির যে দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করেছেন তা বৈশ্বিক টেকসই উন্নয়নের ওপর বড় প্রভাব ফেলেছে। একই সঙ্গে প্রমাণ হয়েছে যে, তিনি একজন বিশ্বনেতা। এ খবর দিয়েছে পাকিস্তানের প্রভাবশালী পত্রিকা ডন অনলাইন।
এতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের প্রশংসায় আরো বলেছেন, শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বে করোনা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বড় সফলতা অর্জন করেছে চীন। বিশ্বব্যাপী জনগণের মঙ্গলের জন্য কোভিড-১৯ টিকার ঘোষণা দিয়েছেন শি জিনপিং।
এতে তার সহানুভূতি এবং ন্যায়বিচারের প্রতিফলন ঘটেছে। প্রেসিডেন্ট শি’র দূরদর্শী নেতৃত্বের অধীনে চীনের রূপান্তরের প্রশংসা করেন ইমরান খান। তিনি বলেন, শি’র জনকেন্দ্রীয় দর্শন গুরুত্বপূর্ণ ব্যতিক্রম হিসেবে দেখা হয় চীনে। কারণ, এর অধীনে সম্প্রতি চীন থেকে চরম দারিদ্র্যকে নির্মূল করা হয়েছে। মানব ইতিহাসে এটা অন্যতম এক মহৎ অর্জন।
সিপিসিরও প্রশংসা করেন ইমরান খান। তিনি বলেন, চীনা জনগণের উদ্দীপনায় ঐক্যবদ্ধ এই দলটি। এই দলটি তাদেরকে উজ্জীবিত করেছে বিদেশি দখলদারিত্ব থেকে স্বাধীনতার মহাকাব্যের সংগ্রামে। দলটির নেতা কমিউনিস্ট চীনের প্রতিষ্ঠাতা জনক মাও সেতুং চীনের জনগণকে তাদের জাতীয় মর্যাদা এবং নিজেদের গর্ব, নিজেদের সম্মান এবং বিশ্বে চীনকে যৌগ্য স্থানে তুলে ধরতে নির্দেশনা দিয়েছেন। কয়েক দশক ধরে চীনের উদ্দীপপনা সীমান্তের বাইরেও নতুন আশা ও প্রাণশক্তি জাগিয়ে তুলেছে। এখান থেকে ঔপনিবেশিক জাতিগুলো উদ্বুদ্ধ হয়েছে এবং তাতে ঔপনিবেশিকতার অবসান হয়েছে।
ইমরান খান আরো বলেন, জনকেন্দ্রীয় উন্নয়ন দর্শনের মধ্যেই রয়েছে সিপিসির বিস্ময়কর সাফল্য। তারা জনগণের সেবা করতে এবং তাদের মঙ্গলকে অগ্রাধিকার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইমরান খান বলেন, জাতীয় উন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণ, দুর্নীতি বিরোধী প্রচারণা এবং জাতি গঠনে সব দিক থেকে সিপিসির উল্লেখযোগ্য অর্জনকে অনুকরণ করবে পাকিস্তান।
তিনি আরো বলেন, সিপিসির অর্জন বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নতুন নতুন চিন্তার খোরাক যুগিয়েছে। প্রমাণ হয়েছে যে, তাদেরকে শুধু জনগণের সমর্থন পেতে হবে, বৈধতা পেতে হবে- যদি তারা স্বার্থপর না হয়ে দেশের জন্য, জনগণের সেবায় অব্যাহতভাবে কাজ করতে চান।
ইমরান খান আরো বলেন, সিপিসি চীনা জাতির মধ্যে যে মহা নবজাগরণের দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে সেটি এবং পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই)-এর নয়া পাকিস্তান দৃষ্টিভঙ্গি দুই দেশের জনগণের উচ্চাকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটায়।
নিজের দল পিটিআই সম্পর্কে ইমরান খান বলেন, পিটিআই তার প্রতিষ্ঠাকালীন মূলনীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তা হলো আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। এমন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করা যেখানে মানবতা থাকবে, সহানূভূতি থাকবে। এ সময় তিনি পিটিআই সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। যেমন এহসাস প্রোগ্রাম। এটা হলো এশিয়ায় সামাজিক সুরক্ষা বিষয়ক নেতৃ স্থানীয় একটি পদক্ষেপ।
তিনি উল্লেখ করেন, ভূরাজনীতি থেকে ভূঅর্থনীতি এবং চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর (সিপিইসি) বাস্তবায়নের প্রচেষ্টাকে অগ্রাধিকার দেয়ার দিকে অবস্থান নিয়েছে পাকিস্তান। সিপিইসি হলো বিআরআই-এর একটি বড় প্রকল্প। সিপিইসিকে ‘গ্রিন সিপিইসি’তে পরিণত করাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে পাকিস্তান।