পুরুষ অভিভাবক ছাড়াই এবার হজের জন্য নিবন্ধিত হতে পারবেন নারীরা। এরই মধ্যে এ বছরের হজ সম্পর্কিত নীতিমালা ঘোষণা করা হয়েছে। সে অনুযায়ী এ বছর হজ করতে পারবেন ৬০ হাজার মুসলিম নর-নারী। তবে তা সীমাবদ্ধ থাকবে শুধু সৌদি আরবের নাগরিক এবং সেখানে বসবাস করছেন এমন ব্যক্তিদের মধ্যে। এর বাইরের কোনো দেশ থেকে কেউ এ বছর হজে যেতে পারবেন না। যেহেতু শুধু সৌদি আরবের নাগরিক এবং সেখানে বসবাসকারীরা এবার হজ করতে পারবেন, ফলে এবারও বাংলাদেশ বা বাইরের কোনো দেশ থেকে হজযাত্রী হজে যেতে পারছেন না।
এ খবর দিয়ে অনলাইন আরব নিউজ বলছে, এবারের হজের জন্য অনলাইনে এরই মধ্যে নিবন্ধন শুরু হয়েছে। রোববার স্থানীয় সময় রাত ১টায় হজের নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। ২৩ শে জুন রাত ১০ টা পর্যন্ত অবিরাম এই নিবন্ধন করা যাবে। তবে আগেভাগে আবেদনকারীদের জন্য বা আগে আসলে আগে পাবেন- এমন কোনো অগ্রাধিকার সেখানে থাকবে না।
হজের জন্য তিনটি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি প্যাকেজের মূল্য ধরা হয়েছে ১৬,৫৬০.৫০ রিয়াল। অন্যটি ১৪,৩৮১.৯৫ রিয়াল এবং শেষ প্যাকেজের মূল্য ধরা হয়েছে ১২,১১৩.৯৫ রিয়াল। এই তিনটি প্যাকেজের সঙ্গে যোগ হবে ভ্যাট।
হজ ও উমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, হজযাত্রীদেরকে পবিত্র সব স্থানের কাছাকাছি থাকতে হবে। প্রতিটি গাড়িতে সর্বোচ্চ ২০ জন হজযাত্রী বহন করা যাবে। পবিত্র মিনায় অবস্থানকালে প্রতিদিন তিন বেলা খাবার সরবরাহ দেয়া হবে। অন্যদিকে পবিত্র আরাফাতের ময়দানে অবস্থানকালে দু’বেলা খাবার সরবরাহ দেয়া হবে। এগুলো হলো সকালের নাস্তা এবং দুপুরের খাবার। মুজদালিফায় দেয়া হবে রাতের খাবার। এর বাইরে অন্য খাবার এবং কোমল পানীয় থাকবে পর্যাপ্ত আকারে। যে যা পারেন, সেখান থেকে এসব পান করতে পারবেন। তবে হজযাত্রীকে পবিত্র মক্কার বাইরে নিতে দেয়া হবে না এসব খাবার বা পানীয়।
আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে ৫টি ধাপে। এর মধ্যে রয়েছে হজযাত্রী সম্পর্কে রিভিউ, তার স্বাস্থ্যগত তথ্য যাচাই। হজযাত্রীদের সরকারি কাগজপত্র সহ ব্যক্তিগত বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। এরপরই ন্যাশনাল ইনফরমেশন সেন্টার থেকে দেয়া ডাটা নিয়ে তাদের আবেদনের বৈধতা যাচাই করবে সিস্টেম। আবেদন গৃহীত হলেই আবেদনকারীকে পরবর্তী অনুসন্ধানের জন্য একটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেয়া হবে। আবেদনকারীর কোভিড-১৯ বিষয়ক অবস্থা নিশ্চিত হওয়ার পর অর্থ পরিশোধের বিস্তারিতসহ একটি টেক্সট ম্যাসেজ পাঠানো হবে।
হজ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, হজের জন্য রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া মানেই হজের চূড়ান্ত দফা অনুমোদন নয়। এতে আরো বলা হয়েছে, আবেদনকারীর বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্যগত অবস্থা এবং রেজ্যুলুশন সম্পন্ন হওয়ার পর আবেদনকারীকে হজের অনুমোদন দেয়া হবে। যদি দেখা যায় আয়োজন বিষয়ক রেজুল্যুশন ভঙ্গ করা হচ্ছে তাহলে যেকোনো সময় যেকোনো অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করার অধিকার রাখে মন্ত্রণালয়।
হজের জন্য অনুমোদন পাওয়ার আগে সব আবেদনকারীকে অবশ্যই স্বীকারোক্তি দিতে হবে যে, গত ৫ বছরের মধ্যে তিনি পবিত্র হজ করেননি। তারা কোনো জটিল রোগে ভুগছেন না। এমনকি কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত নন। এ ছাড়া ৬ মাসের মধ্যে তারা কোনো জটিল রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হননি বা কোনো ডায়ালাইসিস চিকিৎসা করানো হয়নি মর্মে স্বীকারোক্তি দিতে হবে।