প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদে তৃতীয়বারের মতো বাজেট উপস্থাপিত হতে যাচ্ছে আজ। ‘জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ’ শিরোনামের এবারের বাজেটটি প্রস্তুত হয়েছে সরকারের অতীতের অর্জন এবং উদ্ভূত বর্তমান পরিস্থিতির সমন্বয়ে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) বিকেল ৩টায় বাজেট অধিবেশনে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এবারের বাজেটের আকার ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আলোচনা শেষে আগামী ৩০ জুন এটি পাস হবে।
করোনাকালের দ্বিতীয় এই বাজেট অধিবেশনও সংক্ষিপ্ত হবে বলে জানা গেছে। এবারের বাজেটে মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৯২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। যা জিডিপির ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩৬ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা বেশি।
চলতি অর্থবছরে এ আয়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৫১৭ কোটি টাকা। যদিও বাজেটে মূল লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৩ কোটি টাকা। আয়ের মধ্যে রাজস্ব খাত থেকে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা এবং বৈদেশিক অনুদান নেওয়া হবে ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা।
ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, এবারের বাজেটে সবার স্বার্থ সংরক্ষণ করা হবে। পাশাপাশি পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক মানুষকে সঙ্গে রাখা হবে। রাজস্ব আহরণ কম হলে ব্যয় কমাতে হয়।
আগামী অর্থবছরে বৈদেশিক অনুদান পাওয়ার পরিমাণ ধরা হচ্ছে ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশের মধ্যে রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। মোট জিডিপির আকার ধরা হচ্ছে ৩৪ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
বাজেটে পরিচালন ব্যয়ের মধ্যে আগামী অর্থবছর সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় হবে ঋণের সুদ পরিশোধে। এ খাতে বরাদ্দের ৬৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকার মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ বাবদ খরচ হবে ৬২ হাজার কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণের সুদ বাবদ ব্যয় হবে ৬ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা।
২০২১-২২ অর্থবছরেও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে। নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিয়ে কালো টাকায় ফ্ল্যাট বা ভবন কেনার সুযোগ থাকতে পারে। এছাড়া ১০ শতাংশ কর দিয়ে নগদ বা ব্যাংকে রাখা টাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখা হতে পারে।
২০২১-২২ অর্থবছরে করোনা মোকাবিলা, বিভিন্ন দেশ থেকে ভ্যাকসিন কেনা বাবদ ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়াও বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। এটি মোট বাজেটের ৭ দশমিক ৪ শতাংশ।