কার্যকারিতা বাড়াতে টিকা মিশ্রণের কথা বিবেচনা করছে চীন

কার্যকারিতা বাড়াতে টিকা মিশ্রণের কথা বিবেচনা করছে চীন

আন্তর্জাতিক

করোনা ভাইরাসের টিকার কার্যকারিতা আরো বাড়াতে চায় চীন। এ জন্য তারা একটি টিকার সঙ্গে অন্যটির মিশ্রণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রয়োগের কথা বিবেচনা করছে। চীনের শীর্ষ রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা গাও ফু’কে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে কার্যকারিতার দিক দিয়ে ফাইজার ও মডার্নার টিকা থেকে অনেক পিছিয়ে আছে চীনের টিকা।

শনিবার চীনের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের পরিচালক গাও ফু বলেছেন, টিকার কার্যকারিতা উন্নত করার একটি উপায় হতে পারে জনগণকে ভিন্ন ভিন্ন টিকার ডোজ প্রয়োগ। যেসব টিকা উচ্চ মাত্রায় সুরক্ষা দিতে পারে না, সেগুলোর নিয়ে এভাবে টিকা প্রয়োগ করা যেতে পারে।

তবে তিনি চীনের ভিতরে তৈরি করা টিকা নাকি বিদেশে তৈরি টিকার কথা উল্লেখ করেছেন সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি। চীনের চেংদু শহরে এক সংবাদ সম্মেলনে গাও ফু বলেন, বিভিন্ন প্রযুক্তির তৈরি টিকা প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।তিনি বলেন, ডোজের সংখ্যা পরিবর্তন এবং এক ডোজ টিকা থেকে অন্য ডোজ টিকার মধ্যে সময়ের ব্যবধান পরিবর্তন করা হতে পারে একটি সুনির্দিষ্ট কার্যকর ইস্যু।

উল্লেখ, চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেক যে টিকা তৈরি করেছে তা তিন সপ্তাহেরও কম সময়ের ব্যবধানে দুটি ডোজ প্রয়োগ করতে হয়। ব্রাজিলে এই টিকার তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষায় কার্যকারিতা শতকরা ৪৯.১ ভাগ পাওয়া গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা টিকা কার্যকরের ক্ষেত্রে শতকরা কমপক্ষে ৫০ ভাগ সফলতা ধরে দিলেও চীনের টিকা ব্রাজিলে তার চেয়ে কম কার্যকর হিসেবে দেখা গেছে বলে ব্রাজিলের গবেষকরা রোববার একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন।

তবে ক্ষুদ্র একটি সাবগ্রুপের ওপর কার্যকারিতার শতকরা হার ৬২.৩ ভাগ দেখা গেছে। তাদেরকে তিন সপ্তাহ অথবা তারও বেশি সময়ের ব্যবধানে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়েছিল। সার্বিকভাবে এই টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষায় শতকরা ৫০ ভাগের সামান্য বেশি দেখা গেছে।

করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে আভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদিত চারটি টিকা জনসাধারণের জন্য ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে চীন। পঞ্চম আরেকটি টিকা অল্প পরিমাণে জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে। দেশটির একজন কর্মকর্তা শনিবার বলেছেন, চীন এ বছরের শেষ নাগাদ ৩০০ কোটি টিকা উৎপাদন করবে। তবে চীনের সিনোফার্ম উৎপাদিগত টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কে এখনও কোনো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তারা দাবি করেছে, দুটি টিকা তৈরি করেছে তারা।

এগুলো অন্তর্বর্তী পরীক্ষায় যথাক্রমে ৭৯.৪ ভাগ এবং ৭২.৫ ভাগ কার্যকর দেখা গেছে বলে জানানো হয়েছে।এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কয়েক লাখ টিকা পাঠিয়েছে চীন। দেশটির কর্মকর্তারা এবং রাষ্ট্রীয় মিডিয়া এসব টিকার কার্যকারিতা, নিরাপত্তা ও সক্ষমতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন।

রোববার গ্লোবাল টাইমসকে গাও ফু বলেছেন, বিশ্বে যেসব টিকা তৈরি হয়েছে তার কার্যকারিতা পরীক্ষায় অনেক বেশি, আবার অনেক কমও ফল পাওয়া গেছে। ফলে টিকার কার্যকারিতা বা সুরক্ষা দেয়ার মান বৃদ্ধি করার বিষয়টি বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীদের বিবেচনা করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এক্ষেত্রে টিকার মিশ্রণ এবং রোগ প্রতিরোধ পদ্ধতিকে নতুন করে দেখার মধ্যে সমাধান আসতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

কিছু মিডিয়ায় খবর প্রকাশ হয়েছে যে, গাও ফু বলেছেন চীনে তৈরি করোনা ভাইরাসের টিকার সুরক্ষা হার অনেক কম। এমন অভিযোগ তিনি প্রত্যাখ্যান করেন এবং বলেন, এটা একেবারেই মিথ্যা তথ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *