গর্ডন গ্রিনিজ থেকে শুরু। সবশেষ স্টিভ রোডস। একে একে টাইগারদের সাবেক সব কোচই বিদায় নিয়েছেন ব্যর্থতার বোঝা মাথায় নিয়ে। ক্রিকেটারদের সঙ্গে বনিবনা নেই, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সঙ্গে চাওয়া পাওয়া মিলে না- এমন অভিযোগে কোচদের আশা যাওয়ার মিছিল। এবার বিদায়ের সুর বাজতে শুরু করেছে কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর।
২০১৯-এ দায়িত্ব নেয়ার পর তার সাফল্যের পাল্লা খুব ভারি নয়। যে কারণে শ্রীলঙ্কায় এ মাসেই টেস্ট সিরিজে বড় পরীক্ষার মুখোমুখি এই প্রধান কোচ। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে মাঠে যাদের দায়িত্ব সেই ক্রিকেটারদের ব্যর্থতার দায়ে কেন শুধু কোচই উঠবেন কাঠগড়ায়! এ বিষয়ে বিসিবি পরিচালক, ও জাতীয় দলের সাবেক সহকারি কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, ‘বিসিবি অনেক চিন্তা করে ভালো কোচই আনে।
এবারো বাংলাদেশ টানা ব্যর্থ। আর সেই কারণে শেষ পর্যন্ত বলির পাঠা হতে পারেন ডমিঙ্গো। কারণও আছে এমন গুঞ্জনের। এই কোচের অধীনে সাত টেস্টের ছয়টিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। ৯ ওয়ানডে খেলে জয় ছয়টিতে। তাও দেশের মাটিতে দুর্বল জিম্বাবুয়ে ও ওয়েন্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় সারির দলের বিপক্ষে। অন্যদিকে ১০ টি-টোয়েন্টিতে এসেছে মাত্র ৩ জয়। সবশেষ নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দুই সিরিজে বাজেভাবে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে টাইগাররা।
এতে আঙুল প্রধান কোচের দিকে। তবে খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘আমার মনে হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোচ আনলেই আমরা টানা জিতে যাবো বা বিশ্বকাপ জিতবো এমন নিশ্চয়তা নেই। তাহলেতো আমরা ক্রিকেট বোর্ড কোটি টাকা খরচ করে দুই বছরের জন্য কোচ নিয়ে আসতাম। দেখেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে আমার মনে হয়ে বাংলাদেশের এ যাবত কালের সেরা কোচের একজন।
তিনি ফুলটাইম কোচ, সকাল থেকে রাত ১২টা সব সময়ই তার মাথায় থাকতো ক্রিকেট। কিন্ত তাকে আমরা রাখতে পারিনি। ক্রিকেটাররা তাদের কথা মিডিয়াতে বলেছেন। এই নিয়ে লেখালেখি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত বিসিবি তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।
কিন্তু তিনি যে কেন মাহমুদুল্লাহকে শততম টেস্টে নেননি সেটি কি লেখা হয়েছে? না, মাহমুদুল্লাহর জায়গায় খেলা ছেলেটা ( মোসাদ্দেক) ৭৫ রানের একটি জয়সূচক ইনিংস খেললো সেটি লেখা হয়েছে? আমরা আসলে না জেনেই সমালোচনা করি। ভিতরের কারণগুলো জানতে চাই না।’
বার বার কোচ পরিবর্তনের পক্ষে নন খালেদ মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আমি চার বছর হাথুরুসিংগেহর সঙ্গে কাজ করেছি। দেখেন ও চলে যাওয়ার পর সৌম্যের কী অবস্থা। নতুন কোচ এসে বদলে দিলো ব্যাটিং স্টাইল। আবার ওকে নতুন করে শুরু করতে হলো। এমন বার বার কোচ পরিবর্তনে দলের ওপর প্রভাব পড়ে। তাই ক্রিকেটারদের কোচের কাজগুলো ভালোভাবে করা উচিত।
কারণ তারা যদি পরিকল্পনা মাফিক মাঠে খেলতে না পারে কোচ কী করবেন! মাঠে গিয়ে খেলে দিয়ে আসতেতো পারবেন না। তরুণ যারা আছে তাদের সুযোগগুলো ব্যবহার করতে হবে। আবার সিনিয়র ক্রিকেটারদেরও নিজেদের প্রমাণ করতে হবে। একটা টিম হতে হবে। এখন রাসেল ডমিঙ্গো জানি ভালো কোচ। ওকে নিয়েও কথা হচ্ছে।
তবে আমি যেহেতু তার সঙ্গে কাজ করিনি তাই বলতে পারবো না সমস্যা কোথায়? তবে শ্রীলঙ্কা সফরে দলের সঙ্গে থাকবো। দেখবো আসলে কী সমস্যা হচ্ছে। কোচ নাকি ক্রিকেটারদের মধ্যেই সমস্যা।’