যেভাবে কোরিয়ান সিনেমার নায়ক নারায়ণগঞ্জের মাহবুব!

যেভাবে কোরিয়ান সিনেমার নায়ক নারায়ণগঞ্জের মাহবুব!

বিনোদন

১৯৯৯ সালে প্রবাসী শ্রমিক হিসেবে বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়া যান মাহবুব। শুরুর দিকে প্রবাসীদের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করা শুরু করেন। পরে ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়েন বড়পর্দার সিনেমার অভিনেতা হিসেবে। একসময় হয়ে যান সিনেমার নায়ক! শ্রমিক থেকে নায়ক হয়ে পৃথিবীর অন্যতম প্রভাবশালী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে জড়িয়ে আছেন তিনি। মাহবুব লি নামে বর্তমানে দেশটির অত্যন্ত পরিচিত মুখও এই বাংলাদেশি নাগরিক।

নায়ক হয়ে ওঠা প্রসঙ্গে মাহবুব বলেন, ‘ছবির পরিচালক আমাকে চিনতেন। এখানে আমার দায়িত্ব ছিল স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজ করা ও একজন হ্যান্ডসাম নায়ককে খুঁজে দেওয়া। খুঁজতে গিয়ে দেখি, মনের মতো কাউকেই পাচ্ছি না। কিন্তু পরিচালক যে বিষয়গুলো চান, তার সবই আমার মধ্যে আছে। নির্মাতাকে গিয়ে বললাম, আমি অভিনয় করলে কেমন হয়? তিনি বললেন, মাহবুব তুমি হ্যান্ডসাম, ভাষাও জানো, ভিসারও সমস্যা নেই। কিন্তু তোমাকে ওজন কমাতে হবে। এভাবেই অভিনয় করা শুরু।’

২০০৯ সালে মুক্তি পায় মাহবুব অভিনীত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘হোয়ার ইজ রনি…’। একই বছরে আসে ‘বান্ধবী’, যা দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়। মাহবুব অভিনীত অন্যান্য সিনেমার মধ্যে আছে—‘মাই ফ্রেন্ড অ্যান্ড হিজ ওয়াইফ’, ‘হোয়ার ইজ রনি’, ‘পেইনড’, ‘ইউ আর মাই ভাম্পায়ার’, ‘পারফেক্ট প্রপোজাল’, ‘আসুরা: সিটি অব ম্যাডনেস’ ও ‘লাভ ইন কোরিয়া’।

মাহবুব আরো বললেন, ‘অভিবাসী কর্মী হিসেবে প্রায়ই বৈষম্যের শিকার হতে হয় আমাদের। এ কারণে নিজে অভিবাসী হয়েও অন্যদের নিয়ে কাজ করা শুরু করি। একটা সময় বুঝতে পারি, নিজেদের জন্য গণমাধ্যম তৈরি করা দরকার। তৈরি করতে থাকি ডকুমেন্টারি। অভিনয় বা চলচ্চিত্র নিয়ে একেবারেই অভিজ্ঞতা ছিল না আমার। পরিকল্পনা ছিল ২-৩ বছর সেখানে থাকবো। তারপর দেশে আসবো। তবে সেটা হয়নি। ঘটনাক্রমে যুক্ত হয়ে যাই চলচ্চিত্রে।’

২০০৪ সাল থেকে ডকুমেন্টারির কাজ শুরু করেন মাহবুব। কারণ, স্থানীয় মিডিয়া প্রবাসীদের কোনো সুযোগ দিচ্ছিল না। ‘দ্য রোড অব দ্য রিভেঞ্জ’ নামের শর্ট ফিল্মে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। এটা ছিল এক ধরনের ব্ল্যাক কমেডি।

অভিনেতা হিসেবে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে মর্যাদাপূর্ণ পুরষ্কারও পান তিনি। এখন পর্যন্ত ১৫টির মতো কোরিয়ান নাটক, সিনেমা ও বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছেন মাহবুব। নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজে পড়াশোনা করা মাহবুব এখন দক্ষিণ কোরিয়ান চলচ্চিত্র শিল্পে সরাসরি যুক্ত আছেন। পাশাপাশি কাজ করছেন চলচ্চিত্র নির্মাণ ও পরিবেশনায়। বাংলাদেশ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন ইন কোরিয়ার পরিচালকও তিনি। সূত্র: বিবিসি বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *