মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার মেয়র আব্দুস সালামের বাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে মেয়র, তার স্ত্রী ও চার কাউন্সিলরসহ ১৪ জন অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন৷ মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে আটটার দিকে পৌরসভার রামগোপালপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে৷
আহতদের অভিযোগ, দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় এ ঘটনা ঘটেছে৷ তবে বিস্ফোরণের সঠিক কারণ নিয়ে সন্দিহান পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস৷ গ্যাস থেকে বিস্ফোরণ কিনা তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না তারা৷ তবে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক রাত সাড়ে ১১টার দিকে সংবাদকে জানিয়েছেন, ঢাকা থেকে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়েছে৷
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে পাওয়া তথ্যমতে আহতরা হলেন: পৌর মেয়র আব্দুস সালাম (৫৫), তার স্ত্রী কানন বেগম (৪০), পৌরসভার প্যানেল মেয়র রহিম বাদশা (৪৫), মো. আওলাদ হোসেন (৪২), কাউন্সিলর দ্বীন ইসলাম (৪০), মো. মতাজুল ইসলাম (২৫), মো. মাইনুদ্দিন (৪৪), মোশারফ হোসেন (৪২), পান্না মিয়া (৫০), কালু মিয়া (৪০), মো. ইদ্রিস আলী (৫০), মাে.সোহেল (৫২), শ্যামল দাস (৪৫), মহিউদ্দিন৷
আহতদের কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন আছেন৷ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া৷ তিনি বলেন, মুন্সিগঞ্জ থেকে কয়েকজনকে বার্ন ইউনিটে আনা হয়েছে৷ এদের মধ্যে এক নারীর অবস্থা বেশি আশঙ্কাজনক।
মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শৈবাল বসাক জানান, মিরকাদিম থেকে শরীরের বিভিন্ন অংশে পোড়া নিয়ে ১৩ জন রোগী হাসপাতালে আসেন। এদের মধ্যে অনেকের শরীরের ৩০ থেকে ৪০ ভাগ পুড়ে গিয়েছিল৷
স্থানীয়রা জানান, রাত সাড়ে আটটার দিকে বিকট শব্দ পান তারা৷ পরে পৌর মেয়র আব্দুস সালামের বাড়ি থেকে আর্তচিৎকার শুনতে পান৷ গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়েছে বলেই প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলেন স্থানীয়রা৷ পরে কেউ কেউ বোমা হামলার কথা বলাবলি করলে তা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে৷
গ্যাস বিস্ফোরণ নয় বোমা হামলার দাবি আহত পৌর প্যানেল মেয়র আওলাদ হোসেনের চাচাতো ভাই সেন্টু মিয়ার৷ তিনি বলেন, পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে মেয়রের বাসভবনের তৃতীয়তলার একটি কক্ষে কাউন্সিলরদের নিয়ে আলোচনা চলছিল৷ হঠাৎ করেই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে৷ দুর্বৃত্তদের কেউ বোমা হামলা করতে পারে বলে ধারণা তার৷
তবে মুন্সিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবু ইউসুফ সংবাদকে বলেন, ‘বিস্ফোরণ আসলে কিসের তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না৷ আহতদের কাউকে গিয়ে ঘটনাস্থলে পাইনি৷ শুনেছি মেয়রের স্ত্রী চুলা জ্বালাতে গিয়েছিলেন৷ গ্যাস বিস্ফোরণ হতে পারে৷ তবে স্থানীয় অনেকে বোমা হামলার কথাও বলছেন৷ তবে প্রাথমিকভাবে সেরকম কোনো আলামত পাননি তারা৷’
ঘটনাস্থল থেকে মুঠোফোনে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক সংবাদকে বলেন, ‘বিস্ফোরণের কারণ এই মুহুর্তে বলা যাচ্ছে না৷ বোমা হামলার কোনো আলামত এখনও পাইনি৷ তবে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়েছে৷’