সোমবার রাত ৮টার দিকে শুরু হওয়া এ ঘটনায় টুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নেতৃত্বে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে পুলিশের সঙ্গে কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার এবং কুয়াকাটা প্রেসক্লাব সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লব জনসাধারণকে হ্যান্ড মাইকে নিবৃত করার চেষ্টা চালান। পরে রাত ৯টার দিকে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি। পরে মুক্ত হন ইউএনও।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক সরকার ঘোষিত কঠোর নির্দেশনা বাস্তবায়নে ব্যবসায়ী এবং পথচারীদের ঘরে ফেরার তাগিদ দেন। সোমবার রাত ৮টার দিকে কুয়াকাটা চৌরাস্তায় একটি পত্রিকার (তালাশ) স্টিকার লাগানো মোটরসাইকেল চালিয়ে ইলিয়াস শেখ নামক এক যুবককে থামিয়ে তার পরিচয় জানতে চায়। এ সময় ইলিয়াস শেখ সাংবাদিক পরিচয় দিলে তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করে ইউএনও।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ইউএনওর নির্দেশে তিন পুলিশ ও এক আনসার ওই যুবককে পেটাতে থাকে। ইউএনও নিজেও কিল ঘুষি এবং লাথি মারে। এমন নির্যাতন দেখে স্থানীয় জনতা ইউএনওর বিচার চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। ইউএনওকে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ করে রাখে উত্তেজিত জনতা।
পরে মহিপুর থানা পুলিশ, কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের সহায়তায় ইউএনওকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। রাত ৯টার দিকে উত্তেজিত জনতাকে মাইকিং করে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় পুলিশ।
আহত ইলিয়াসকে কুয়াকাটা ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ইলিয়াস শেখ কুয়াকাটা সৈকতে ফটোগ্রাফারদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে ইলিয়াস শেখ বলেন, “কুয়াকাটা চৌরাস্তায় এলে ইউএনও আমার মোটরসাইকেল থামিয়ে পরিচয় জানতে চাওয়া মাত্রই আমাকে মারধর শুরু করেন। পরে স্থানীয়রা এ খবরে উত্তেজিত হয়ে তাকে অবরুদ্ধ করেছে।”
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান সংঘর্ষ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, “খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত লোকজনকে ঘরে ফেরার অনুরোধ জানালে তারা ফিরে যায়। বর্তমানে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে।”
ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক বলেন, “করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে গেলে স্থানীয় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা ক্ষেপে যান। একপর্যায়ে তারা আমাকে কিছুক্ষণের জন্য ঘেরাও করে রাখার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ পরিবেশ স্বাভাবিক করে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “বিষয়টি জানার পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। প্রকৃত ঘটনা জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।”