প্রথম টি টোয়েন্টিতে ৬৬ রানে জিতে গেছে নিউজিল্যান্ড। আজ রোববার হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলের হতশ্রী পারফরম্যান্সের কারণে হার বরণ করতে হয়েছে। এর পেছনে কারণ শুধু মাত্র দলের টপ অর্ডারদের বাজে ব্যাটিং। তবে লড়াই করে আশার জোগান দিয়েছিল লোয়ার অর্ডার। তবে, অধিনায়ক হিসেবে মাহমুদউল্লাহর দাবি, বোলিংয়ে ভালো করেছে তার দল। হারের কারণ হিসেবে তিনি দেখিয়েছেন, ব্যাটিং ব্যর্থতাকে!
মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমাদের সুযোগ ছিল। শুরুতে আমরা দুটি উইকেট নিয়েছি, রান রেট সাতের নীচে ছিল। কিন্তু ডেভন কনওয়ে যেভাবে ব্যাটিং করেছে, সে খুব সাবলীল ছিল। সাম্প্রতিক ইনিংসগুলোয় ধারাবাহিকভাবে দারুণ খেলেছে সে। আমাদের সুযোগ ছিল বাউন্ডারিতে, কিন্তু সেটি ছক্কা হয়ে যায়। বোলাররা ভালো বোলিং করেছে, বোলারদের দোষ দিতে পারছি না। ফিল্ডিংয়ে কিছু বাড়তি বাউন্ডারি হয়েছে আমাদের। ১৯০ রানের আশেপাশে হলে সেটি তাড়া করে জেতা যেত। কিন্তু একসঙ্গে বেশি উইকেট হারানোর পর আর মাচ জেতা যায় না। আমরা এটাই করছি, একই ভুল বারবার করে চলেছি।’
আজ রোববার প্রথম ম্যাচে হারের পর সংবাদ সম্মেলনে কথাগুলো বলেন অধিনায়ক। ম্যাচ হারলেও কিছু ইতিবাচক দিকের কথা উল্লেখ করেন তিনি। মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘একটা ইতিবাচক দিক আমি নিতে চাই, ইন্টেন্ট ছিল আমাদের, যা দেখতে পাওয়াটা ভালো ছিল। টি-টোয়েন্টিতে ১০০-১২০ রানে অল আউট হতেই পারেন। কিন্তু অন্তত জয়ের তাড়না যদি দেখানো যায়, তাহলে সুযোগ থাকে।’
সাকিব আগে থেকেই নেই, সরে গেছেন তামিম, চোটের কারণে বাদ পড়েছেন মুশফিক। অভিজ্ঞদের অনুপস্থিতি বিপক্ষ দলের জন্য সুযোগ বলে মনে করছেন মাহমুদউল্লাহ। বলেন, ‘আমার মনে হয় এটি তরুণদের জন্য ভালো একটি সুযোগ, বিশেষ করে নাইম শেখ, আফিফ দুজন অভিষিক্ত ছিল আজকে তাদের জন্য। এটি তাদের জন্য সুযোগ বিশ্বকে দেখানোর, তারা কতটা ভালো। আমরা হয়তো সবসময় সব অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে একসঙ্গে পাব না। এর সঙ্গে আমাদের মানিয়ে নিতে হবে। কাউকে এগিয়ে আসতে হবে এবং দেখাতে হবে যে বাংলাদেশকে ম্যাচ জেতানোর সামর্থ্য তার আছে।’
সেডন পার্কে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে পরাজয় নিশ্চিত ছিল টাইগারদের। তারপরও দলীয় পারফরম্যান্সে খুশি হওয়ার জায়গা বলতে শুধু আফিফ আর সাইফউদ্দিনের লড়াই। দুর্দান্ত খেলেছেন আফিফ। অর্ধশতক থেকে কিছুটা দূরে থেকে সাজঘরে ফেরেন তিনি। তার আগে দলকে রেখে আসেন সম্মানজনক পরাজয়ের দ্বারে। তার দারুণ ব্যাটিং বাংলাদেশের রান ১০০ পার করে দেয়। ৩৩ বলে ৪৫ রান করে বিদায় নেন আফিফ। ৫টি বাউন্ডারির সঙ্গে ১টি ছক্কার মার ছিল তার ইনিংসে। লকি ফার্গুসনের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি।
এদিস নিউজিল্যান্ড দলের সেরা বোলার হিসেবে আবির্ভাব হয়েছিল লেগ স্পিনার ইশ সোদির। তার ঘূর্ণিতেই টাইগারদের পায়ে শেকর বাধে। উইকেট নিয়েছেন ৪টি। সৌম্য, মিথুন, মাহমুদউল্লাহ ও মেহেদি তারই শিকার হয়েছেন।
নিজেদের ব্যাটিং ইনিংসের শুরুতেই সাজঘরে ফেরেন লিটন। সাউদির বলে সোদির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। তারপর আউট হন নাঈম। সৌম্য সরকার আউট হন ৫ রানে। এরপর তার পথ ধরেন মোহাম্মদ মিঠুন। ১১ রান করে ফিরে যান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। মেহেদী হাসান আউট হন কোনো রান না করেই।
এর আগে নিজেদের ইনিংসে মাত্র তিন উইকেট হারিয়ে ২১ রান করে নিউজিল্যান্ড। কনওয়ে ও উইল ইয়ং তুলে নেন ফিফটি। দলের হয়ে অভিষেকেই দুটি উইকেট তুলে নেন নাসুম। মেহেদি নেন একটি উইকেট।
এর আগে কিউইদের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এখনও কোনো ম্যাচ জিততে পারেনি টাইগাররা।