মিয়ানমারে রক্ত ঝরছেই : উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ

মিয়ানমারে রক্ত ঝরছেই : উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ

আন্তর্জাতিক

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারীদের ওপর ফের গুলি ছুড়েছে নিরাপত্তা বাহিনী, অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত সেখানে অন্তত ১৮৩ জন নিহত হয়েছে বলে একটি অধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।
একটি সংগঠনটি বলছে, সোমবারও বিক্ষোভে দমন-পীড়নে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন ছিল রোববার।

এদিন বিক্ষোভের মধ্যে মোট ৭৪ জন নিহত হয়েছে বলে এএপিপির ভাষ্য। মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হাতে বেসামরিক জনগণের এই অব্যাহত প্রাণহানিতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। জাতিসংঘের মুখপাত্র সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সম্মিলিতভাবে এবং দ্বিপক্ষীয় চেষ্টার মাধ্যমে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর এই দমন-পীড়ন বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে।
মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয় ও পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর হাখাসহ বেশ কয়েকটি শহরে কারাবন্দি নেত্রী অং সান সু চির সমর্থকরা সোমবার সমাবেশ করে। মধ্যাঞ্চলীয় মাইংইয়ান ও অংলান শহরে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি চালায় বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের বরাতে জানিয়েছে। মাইংইয়ানের ১৮ বছর বয়সী এক আন্দোলনকারী টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেছেন, একটি মেয়ের মাথায় এবং এক কিশোরের মুখে তিনি গুলি লাগতে দেখেছেন।

বিক্ষোভকারীরা রোববার চীনা অর্থায়নে পরিচালিত অনেকগুলো কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় ইয়াংগনের হ্লাইং থারিয়ার ও আরও কয়েকটি জেলা এবং মান্দালয়ের একাংশে সামরিক আইন জারি করা হয়েছে। বার্তা সংস্থা মিয়ানমার নাও তাদের প্রতিবেদনে মাইংইয়ানে তিন ও অংলানে দুই প্রতিবাদকারী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে। মান্দালয়েও একজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন শহরটির এক সাংবাদিক।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকেও অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ দমনে দিন দিন আরও সহিংস হয়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এদিকে রোববার ইয়াংগনের বিভিন্ন কারখানায় অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর চীনের দিক থেকেও কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে। চীনা সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস লিখেছে, মিয়ানমারে  চীনের বিনিয়োগ করা ৩২টি  কারখানা ‘ভয়াবহ আক্রমণে লণ্ডভণ্ড’ হয়েছে।

এতে ৩ কোটি ৭০ লাখ ডলারের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি দুই চীনা কর্মী আহত হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। চীনের দূতাবাস মিয়ানমারের জেনারেলদেরকে সহিংসতা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। মিয়ানমারে প্রভাব বিস্তারে চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা জাপান জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে কি ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখানো যায় তা নিয়ে ভাবছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *