দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় নন-বাসমতি চাল আমদানি অব্যাহত রয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে চালের বাজারমূল্য স্বাভাবিক রাখতে চাল আমদানির উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে সরকার। এখন শতকরা ২৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে সরকারের শর্তাবলি মেনেই ৩৭০ থেকে ৪২৫ ডলারের মধ্যে প্রতি মেট্রিকটন চাল আমদানি করছেন আমদানিকারকরা।
হিলি সীমান্তের ওপারের পাইপলাইন থেকে দ্রুত চাল আমদানি হওয়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। এদিকে ২২ মাস পর চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে।
হিলি বন্দরের আড়তগুলোতে প্রচুর চালের মজুদ গড়ে উঠেছে। এছাড়াও দেড় হাজার ট্রাক চাল বোঝাই করে দেশে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারত সীমান্তের পাইপলাইনে রয়েছে। সাতদিনের ব্যবধানে এখন স্বর্ণা চাল প্রতি কেজি ৪৪ টাকা দাম কমে বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা ৫০ পয়সা, ২৮ চাল ৪৭ থেকে ৪২ টাকায়, সম্পা কাটারি ৫৬ টাকা থেকে ৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চাল আমদানিকারক বাবলু রহমান ও শাহিনুর রেজা শাহিন জানান, চালের আমদানি বেড়ে গেলে দাম আরও কমে আসবে। তবে লোকসান গুনবেন আমদানিকারকেরা। কারণ বেশি দামে চাল কিনে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রচুর চাল আমদানি হওয়ায় ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন জানান, চালের বাজার মূল্য স্বাভাবিক রাখতে ভারত থেকে ১০ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন নন-বাসমতি চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে যানজটের কারণে ভারত থেকে প্রতি ট্রাক চাল আমদানিতে সময় লাগছে ১০ থেকে ২০ দিন। প্রতিটি ট্রাকে প্রতিদিন ১ হাজার টাকা ডিটেনশন চার্জ গুনতে হচ্ছে আমদানিকারকদের।
তিনি আরও জানান, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৭০ থেকে ১০০ ট্রাক চাল আমদানি হচ্ছে এবং তড়িৎ চাল খালাস করে বাজারজাত করা হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রচুর চাল আমদানি হওয়ায় হিলি বন্দরের পাইকারি বাজারে চালের দাম কেজি প্রতি ২ থেকে ৩ টাকা কমে গেছে। আর এতে করে আমদানিকারকেরা লোকসানও গুনছেন। আমরা আমদানিকারকরা চালের প্রচুর এলসি দিয়েছি। সেগুলো পর্যায়ক্রমে আমদানি হলে আরও দাম কমবে বলে মনে করেন তিনি।
হিলি শুল্ক স্টেশনের উপ-কমিশনার সাইদুল আলম জানান, চাল দ্রুত আমদানির পাশাপাশি আমরা তড়িৎ খালাসে ও বাজারজাতকরণে আমরা তৎপর আছি। গত ৯ জানুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২ মাসে ৬১ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে। আর এর বিপরীতে রাজস্ব এসেছে ৫৩ কোটি ৩৭ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। ওদিকে শতকরা ২৮ থেকে ৬০ শতাংশ শুল্ক হার বৃদ্ধি করায় গত ২০১৯ সালের মার্চ মাস থেকে নন-বাসমতি চাল আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।