সেনা সরকার নামাতে জাতিসংঘের পদক্ষেপ চান মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত

সেনা সরকার নামাতে জাতিসংঘের পদক্ষেপ চান মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত

আন্তর্জাতিক

জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কিয়াউ মো তুন দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘকে ‘কার্যকর যে কোনো পদক্ষেপ’ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের জেনারেল অ্যাসেমব্লিতে তুন বলেন যে, তিনি সু চির সরকারের পক্ষে কথা বলছেন। তিনি জাতিসংঘকে ‘মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং জনগণের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কোনো উপায় বের করার জন্য’ আবেদন জানান। খবর রয়টার্সের।

কিয়াউ মো তুন বলেন, ‘অবিলম্বে সামরিক অভ্যুত্থানের অবসান, নিরপরাধ জনগণের ওপর নিপীড়ন বন্ধ করা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে আমাদের আরও কঠোর সম্ভাব্য পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে।’ এ আহ্বানের পর তিনি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে প্রশংসিত হয়েছেন।

মিয়ানমারের গত নির্বাচনে জয়ী গণতান্ত্রিক শক্তির পক্ষে লিখিত বক্তব্যটি পড়তে গিয়ে কিয়ু মো তুন আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, তার দেশের বৈধ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।

বার্মিজ ভাষায় শেষ বাক্য বলে এ কূটনীতিক গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীদের তিন-আঙুল প্রদর্শন করেন এবং ঘোষণা দেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্যই বিজয়ী হবে’।

এ ঘটনার পর শনিবার ইয়াঙ্গুন পুলিশ সামরিক শাসন বিরোধীদের দমনে কঠোর পদক্ষেপের দিকে গেছে।

১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল এবং মিয়ানমারের নির্বাচিত নেতা অং সান সুচি ও তার দলীয় নেতাদের অনেককে আটক করার পর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি অস্থিরতা চলছে।

অভ্যুত্থানের পর থেকে হাজার হাজার প্রতিবাদকারী মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোসহ বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমে আসে। পশ্চিমা দেশগুলোও এ অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছে। একই সঙ্গে কিছুক্ষেত্রে সীমিত নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চাপ তৈরি করা হয়েছে।

আটকের পর থেকে সু চির অবস্থান নিয়ে অনিশ্চয়তা বেড়েছে। শুক্রবার ইনডিপেন্ডেন্ট মিয়ানমার নাউ ওয়েবসাইটে তার ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) দলের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলেছে, সু চিকে এই সপ্তাহে গৃহবন্দি দশা থেকে গোপন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এদিকে শনিবার ব্যাপক বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছিল সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী আন্দোলনকারীরা। তবে দেশটির প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনসহ অন্যান্য শহরে প্রতিবাদকারীদের জড়ো হওয়ার স্থানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, আন্দোলনকারীরা জড়ো হতে শুরু করলে তাদের অনেককে আটক করা হয়েছে। ইয়াঙ্গুনে আটককৃতদের মধ্যে অন্তত দু’জন গণমাধ্যম কর্মী রয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মিডিয়াকর্মী বলেন, ‘তারা আমাকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করেছিল। তবে আমি পালিয়ে পালিয়ে এসেছি।’

রাবার বুলেট, স্টান গ্রেনেড এবং ফাঁকা গুলি চালিয়ে ইয়াঙ্গুন, মান্ডলে, নেপিডোসহ অন্যান্য শহরে পুলিশ বিক্ষোভ দমনের একদিন পর নতুন এ পুলিশি পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। পুলিশের ওই বিক্ষোভ দমন পদক্ষেপে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *