যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় অভিশংসন বিচারের শুনানিতে ডেমোক্র্যাট কৌঁসুলিরা ক্যাপিটলে হামলার ঘটনায় সদ্যবিদায়ী প্রেসিডেন্টই ‘প্রধান উসকানিদাতার’ ভূমিকা পালন করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন।
ট্রাম্প সেদিন ক্যাপিটলের সবাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিলেন, ভাষ্য তাদের।নবেম্বরের নির্বাচনে জো বাইডেনের জয়কে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলাকালে ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে উগ্র ট্রাম্প সমর্থকদের ওই নজিরবিহীন হামলায় ৫ জন নিহত হয়।
এ ঘটনার পর ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে ট্রাম্প দ্বিতীয়বার অভিশংসিত হন; যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এর আগে আর কোনো প্রেসিডেন্ট দুইবার অভিশংসিত হননি বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।বুধবার সিনেটে ডেমোক্র্যাট অভিশংসন ব্যবস্থাপকরা উচ্চকক্ষের আইনপ্রণেতাদেরকে ক্যাপিটলে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার নতুন কিছু ভিডিও ফুটেজ দেখান।
আগে প্রকাশিত হয়নি এসব ভিডিওতে দাঙ্গাকারীরা কি করে কংগ্রেস ভবনে ঢুকে পড়েছিল এবং যে আইনপ্রণেতারা নবেম্বরের নির্বাচনের ফলকে স্বীকৃতি দেওয়ার কাজ করছিলেন, তাদের দিকে তেড়ে গিয়েছিল তার স্পষ্ট চিত্র ফুটে উঠেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ভিডিও ক্লিপের একটিতে রিপাবলিকান সেনেটর মিট রমনিকে পুলিশের এক কর্মকর্তার নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য আছে; অন্য একটিতে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ও তার পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নিতে দেখা যাচ্ছে, সেসময় খানিকটা দূরেই দাঙ্গাকারীরা নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যানে রাজি না হওয়া পেন্সকে ফাঁসিতে ঝোলানোর দাবি জানিয়ে স্লোগান দিচ্ছিল।
আরেক ভিডিওতে ন্যান্সি পেলোসির কার্যালয়ের কর্মীদের লুকিয়ে থাকা অবস্থায় ফিসফিস করে কথা বলতে শোনা গেছে; সেসময় দাঙ্গাকারীরা ওই কার্যালয়ে ঢুকে প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকারের খোঁজ করছিল; চিৎকার করে বলছিল ‘কোথায় তুমি, ন্যান্সি’।
বুধবার ডেমোক্র্যাট কৌঁসুলিরা সিনেটরদেরকে মোবাইল ফোনের কয়েকটি ফুটেজও দেখান। এর একটিতে এক ট্রাম্প সমর্থককে প্রতিনিধি পরিষদের লবিতে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় গুলিবিদ্ধ হতে দেখা যায়। ওই নারী ঘটনাস্থলেই মারা যান।
অভিশংসন বিচারের এ পর্বে ডেমোক্র্যাট কৌঁসুলিদের পাশাপাশি ট্রাম্পের আইনজীবীরাও তাদের বক্তব্য উপস্থাপনে সর্বোচ্চ ১৬ ঘণ্টা সময় পাবেন।যুক্তিতর্ক শেষে সিনেটররা ভোটের মাধ্যমে তাদের রায় জানাবেন।
ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করতে হলে ১০০ সদস্যবিশিষ্ট উচ্চকক্ষের দুই তৃতীয়াংশের সমর্থন লাগবে। কিন্তু বেশিরভাগ রিপাবালকিন সিনেটর এখনও ট্রাম্পের পক্ষে থাকায় সদ্যবিদায়ী এ প্রেসিডেন্ট শেষ পর্যন্ত খালাস পাবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।