হুথিদের ওপর আরোপিত ‘সন্ত্রাসী’ তকমা তুলে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

হুথিদের ওপর আরোপিত ‘সন্ত্রাসী’ তকমা তুলে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক

ক্ষমতা ছাড়ার একদম শেষ মুহূর্তে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেসব বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তার মধ্যে অন্যতম ইয়েমেনি হুথিদের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া। তবে দায়িত্বগ্রহণের দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই সেই স্বীকৃতি প্রত্যাহার করতে চলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। খবর রয়টার্সের।

শুক্রবার কংগ্রেসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ইয়েমেনি হুথিদের সন্ত্রাসী স্বীকৃতি প্রত্যাহারের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন দেশটির পররাষ্ট্র বিভাগের এক কর্মকর্তা।

ওই কর্মকর্তা বলেছেন, আমাদের পদক্ষেপ পুরোটাই মানবিক পরিস্থিতির জন্য। জাতিসংঘসহ মানবিক সংস্থাগুলো স্পষ্ট বলেছিল যে, আগের প্রশাসনের শেষ মুহূর্তের ওই স্বীকৃতিতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট আরো ত্বরান্বিত হবে।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, ইয়েমেনের প্রায় আড়াই কোটি জনগণের মধ্যে ৮০ শতাংশেরই জরুরি ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন। দেশটির এই পরিস্থিতিকে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বাজে মানবিক সংকট হিসেবে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।

ক্ষমতা ছাড়ার মাত্র একদিন আগে, অর্থাৎ গত ১৯ জানুয়ারি ইয়েমেনি হুথিদের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে ঘোষণা দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। এর ফলে হুথিদের সঙ্গে মার্কিন নাগরিক ও সংস্থাগুলোর আর্থিক লেনদেন পুরোপুরি নিষিদ্ধ হয়ে যায়।

অবশ্য জাতিসংঘ, রেড ক্রসের কার্যক্রম এবং কৃষি পণ্য, ওষুধ ও মেডিক্যাল সরঞ্জাম রফতানি এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত রাখে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেটি ইয়েমেনের সংকট কাটাতে যথেষ্ট নয় জানিয়ে ওই স্বীকৃতি পুরোপুরি প্রত্যাহারের আহ্বান জানান জাতিসংঘ ও ত্রাণ সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারা।

২০১৫ সালে ইরান-সমর্থিত হুথিদের দমনে ইয়েমেনে প্রবেশ করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। লড়াইটি ইয়েমেনি সহিংসতা হিসেবে দেখালেও আদতে সেটি ইরান-সৌদির ছায়াযুদ্ধ হিসেবে মনে করা হয়। এতে বরবরই পূর্ণ সমর্থন ছিল ট্রাম্প প্রশাসনের।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেন সহিংসতায় সব পক্ষই যুদ্ধ আইন লঙ্ঘন করছে এবং অনেক ক্ষেত্রে যুদ্ধপরাধের মতো গুরুতর অপরাধও হচ্ছে।

সংস্থাটির তথ্যমতে, সেখানে সৌদি জোট এবং হুথি যোদ্ধা উভয়পক্ষই জনবহুল এলাকায় মর্টার, রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এ সহিংসতায় ইয়েমেনের হাজার হাজার নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, ঘরছাড়া হয়েছেন কয়েক লাখ।

 

সূত্র: রয়টার্স

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *