যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক শামসুল হক। বাংলাদেশে শিক্ষাজীবনের শুরুতে ঝরেপড়া এই লড়াকু প্রবাসী ১৯৯১ সালে মার্কিন মুলুকে পাড়ি দেন।
নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ২৯ জানুয়ারি কুইন্সের পুলিশ একাডেমির একটি অনুষ্ঠানে তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়।
শামসুল হকের আশা আরও বাংলাদেশি প্রবাসী ভবিষ্যতে এই পদে আসতে পারবেন, ‘প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আমি এই পদ পেলাম। নিউইয়র্ক পুলিশে কর্মরত বাংলাদেশিরা অদূর ভবিষ্যতে এই পজিশনে আসতে পারবেন বলে আশা করি।’
শামসুল হক ২০০৪ সালে নিউইয়র্ক পুলিশে যোগ দেন। ৬ বছর বাদে সার্জেন্ট হিসেবে পদোন্নতি পান। লেফটেন্যান্ট হন ২০১৪ সালে। এরপর নিউইয়র্ক পুলিশের তদন্ত বিভাগে যোগ দেন।
শামসুল হকের একজন আত্মীয় দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছেন, তার বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জে। বাবার নাম আবদুল মুসাব্বির, মা নুরুন নেছা। দুজনই প্রয়াত।
দুই সন্তানের পিতা শামসুল হক স্ত্রী রুবিনা হক-সহ ভাইদের নিয়ে আগেই নিউইয়র্কে প্রতিষ্ঠিত।
তার দুই ভাই আব্দুল হক এবং নজরুল হক বাংলাদেশে শিক্ষকতা করতেন।
শামসুল হক এই পর্যায়ে আসতে এক অবিশ্বাস্য গল্প লিখেছেন। তার আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৯১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেয়ার আগে বাংলাদেশের স্কুল থেকে ঝরে পড়েন তিনি।
মার্কিন মুলুকে পাড়ি দিয়ে বাসের হেলপারের কাজ থেকে শুরু করে ম্যানেজার এবং ডেলিভারি-ম্যানের চাকরি পর্যন্ত করেছেন। কিন্তু কোনোভাবেই লেখাপড়া ছাড়তে চাননি।
নিজের খরচে ১৯৯৭ সালে উচ্চমাধ্যমিক সমমানের ডিপ্লোমা শেষ করেন। এরপর লাগার্জিয়া কলেজ থেকে এএএস করার পর বারুক কলেজ থেকে বিবিএ করেন।
বিবিএ করার সময় শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হন। ওই সময় প্রায় ৩ লাখ শিক্ষার্থীর হয়ে টিউশন ফি নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন।
শামসুল হক এরপর কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে উচ্চশিক্ষা লাভ করতে যান। সেখানে জনপ্রশাসনে ডিগ্রি নেন।