মাঘ মাসের মাঝে এসে প্রচন্ড শীত আর শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশ। যবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। শহর-নগরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে সেই কাঁপুনি প্রাকৃতিক কারণেই বেশি। গ্রামাঞ্চলের অনেক মানুষের জন্য তা বয়ে এনেছে বাড়তি কষ্ট ও দুর্ভোগ। পশু-পাখি ও প্রাণিকুলের নাকাল অবস্থা।
সোমবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আর ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
এছাড়া চুয়াডাঙ্গায় ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সৈয়দপুরে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রাজারহাটে ৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রাজশাহী ও ঈশ্বরদীতে ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বগুড়ায় ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
মঙ্গলবার থেকে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা থাকলেও শীতের দাপট এ সপ্তাহ জুড়ে চলবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকাসহ দেশজুড়ে এখন শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টানা কয়েকদিন বয়ে যাওয়া এ শীত আরো তিন চারদিন অব্যাহত থাকবে। যেহেতু তীব্র ও মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ রয়েছে; তা কেটে যেতে সময় লাগবে। তবে আজ রাত থেকে তাপমাত্রা বাড়ার প্রবণতা দেখা যাবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, শুধু কক্সবাজার, মাইজদীকোর্ট ছাড়া দেশের সব জায়গায় এখন শৈত্যপ্রবাহ রয়েছে। তবে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আর কমার সম্ভাবনা নেই বলেও আভাস দিয়েছে অধিদপ্তরটি।
চলতি মৌসুমের তৃতীয় দফা শৈত্যপ্রবাহ এটি, যার শুরু হয়েছিল গত বৃহস্পতিবার, দেশের উত্তর জনপদে। এরপর ধীরে ধীরে এর বিস্তার বাড়তে থাকে। চার দিনে পুরোদেশে তা ছড়িয়ে পড়ে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, কুড়িগ্রাম ও রাজশাহী অঞ্চলের উপর দিয়ে এখন তীব্র শৈত্য প্রবাহ এবং ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অন্যান্য এলাকায় এবং টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নিকলী, শ্রীমঙ্গল, খুলনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, বরিশাল ও ভোলা অঞ্চলের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
সোমবারের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারাদেশে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশা বিরাজ করবে। হিমেল হাওয়ায় শীতের অনুভূতি তুলনামূলক বেশি অনুভূত হবে।
চলতি মৌসুমে গত ১৮-২৩ ডিসেম্বর এবং ২৬-৩১ ডিসেম্বর রংপুর, রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়।
তৃতীয় দফা শৈত্যপ্রবাহ শুরুর পর রোববার কুড়িগ্রামের রাজারহাটে থার্মোমিটারের পারদ নেমে যায় ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি শীত মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। সোমবার শ্রীমঙ্গলে একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার তাপমাত্রা দেশের সব রেকর্ড ভেঙে ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গিয়েছিল।