যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় মহাত্মা গান্ধীর ভাস্কর্য ভাঙচুরে ঘটনা ঘটেছে। ক্যালিফোর্নিয়ার ডেভিস শহরের সেন্ট্রাল পার্কে স্থাপিত ২৯৪ গ্রাম ওজনের ৬ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ব্রোঞ্জের ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা।
শনিবার (৩০ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম এই তথ্য জানায়।
সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন প্রবাসী ভারতীয়রা।
পুলিশ জানিয়েছে, গত বুধবার (২৭ জানুয়ারি) ভোরে সেন্ট্রাল পার্কের এক কর্মী প্রথমে মহাত্মা গান্ধীর ভাস্কর্যটি মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। ভাস্কর্যটি গোড়ালি থেকে ভেঙে ফেলা হয়েছে। এর মুখের এক অংশও ভেঙে ফেলা হয়েছে।
ডেভিসের উপ পুলিশ প্রধান পল দরোশভ বলেন, ‘মহাত্মা গান্ধীর ভাস্কর্যটি ডেভিসের একটি অংশের মানুষের সাংস্কৃতিক আদর্শ। আমরা ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি।’
ডেভিস সিটির কাউন্সিলম্যান লুকাস ফ্রেরিকস জানিয়েছেন, ভাঙা ভাস্কর্যটি নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। কখন এবং কী উদ্দেশ্যে এই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ডেভিস শহরের স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি সান ফ্রান্সিসকোয় ভারতীয় কনস্যুলেট জেনারেলও এই ঘটনার তদন্ত করবে। ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন স্থানীয় ইন্দো-আমেরিকান সম্প্রদায়। বিদ্বেষের জেরেই এই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
ফ্রেন্ডস অব ইন্ডিয়া সোসাইটি ইন্টারন্যাশনালের (এফআইএসআই) গুরুং দেশাই বলেন, ‘অনেকদিন ধরেই ভারতবিরোধী এবং হিন্দুবিরোধী কিছু সংগঠন বিদ্বেষের পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছে। বিদ্বেষমূলক মনোভাবের পাশাপাশি ভারতীয় আইকনদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার এমনকি ক্যালিফর্নিয়ায় পাঠ্যবই থেকেও ভারত সংক্রান্ত বিষয়গুলো সরাতে বরাবরই সক্রিয় এসব সংগঠন।’
হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশন (এইচএএফ) ভাস্কর্য ভাঙচুরের নিন্দা জানিয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এবং এফবিআইয়ের তদন্তের দাবি জানিয়েছে। ভাস্কর্যটি মেরামত করে আগের অবস্থানে স্থাপনের দাবিও জানিয়েছে তারা।
এই ভাস্কর্যটি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে পাঠানো হয়েছিল ডেভিস শহরে। স্থানীয় সিটি কাউন্সিল চার বছর আগে ভাস্কর্যটি সেন্ট্রাল পার্কে স্থাপনের ব্যবস্থা করে। সেই সময়ে ভারতবিরোধী সংগঠন ‘অর্গানাইজেশন ফর মাইনোরিটিস ইন ইন্ডিয়া’ (ওএফএমআই) এর ব্যাপক বিরোধিতা করে। যদিও সেই বিরোধকে কোনোভাবে আমলে নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। তারপর থেকেই ওএফএমআই ভাস্কর্যটি সরানোর দাবিতে অনড় ছিল।
এর আগে গত ডিসেম্বরেও ওয়াশিংটন ডিসির ভারতীয় দূতাবাসের সামনে স্থাপিত মহাত্মা গান্ধীর একটি ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।