ব্যাপক উৎপাদন সত্ত্বেও করোনা ভ্যাকসিন নিতে অনাগ্রহী বেশিরভাগ ভারতীয় নাগরিক। তাই কিছুটা বাধ্য হয়েই জনগণকে ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য উৎসাহ দিতে হচ্ছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। খবর- আনন্দবাজার।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) এক ভিডিওবার্তায় মোদি বলেন, বিজ্ঞানীদের সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরেই ভ্যাকসিন বাজারে ছাড়া হয়েছে। তাই অযথা ভয় পাওয়ার প্রয়োজন নেই।
তবে এদিনও ভ্যাকসিন নেয়ার পরে মৃত্যুর ঘটনার খবর জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা বলেনি দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
গত ১৬ জানুয়ারি থেকে ভারতে শুরু হয় করোনার টিকাদান কর্মসূচি। প্রতিদিন তিন লাখ মানুষকে টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও একদিনও তা পূরণ হয়নি। গত সাত দিনে প্রতিষেধক নিলেন মোট ২১ লাখ লোকের টিকা নেয়ার কথা থাকলেও নিয়েছেন মাত্র ১২ লাখ ৭২ হাজার ৯৭ জন।
ভ্যাকসিন নেয়ার পর শনিবার ২৬৭ জনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর জানা গেছে। শোনা গেছে মৃত্যুর কথাও। গত শনিবার গুরুগ্রামে ৫৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি কোভিশিল্ড প্রতিষেধক নিয়েছিলেন। আজ সকালে ঘুমের মধ্যে তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর সঙ্গে প্রতিষেধকের যোগ আছে কি না, ময়নাতদন্তের আগে সে বিষয়ে কথা বলতে নারাজ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। তবে এই ঘটনার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
ভারতে প্রথম দফায় ব্যবহৃত হচ্ছে কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন নামে দুটি ভ্যাকসিন। এদের মধ্যে দেশটিতে তৈরি কোভ্যাক্সিন পরীক্ষামূলক প্রয়োগের তিনটি ধাপ শেষ হওয়ার আগেই ছাড়পত্র পেয়ে যায়। ফলে এর কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। বহু চিকিৎসক কোভ্যাক্সিন নিতে আপত্তি জানানোর কারণে গণটিকাদানের উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
কোভ্যাক্সিনের নির্মাতা ভারত বায়োটেকের বিরুদ্ধে অন্যতম অভিযোগ ছিল যে, তাদের গবেষণা কোনো আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়নি। চলতি সপ্তাহেই কোভ্যাক্সিনের গবেষণা সংক্রান্ত একটি প্রবন্ধ আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিষয়ক জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত হয়েছে।
ব্রিটিশ ওই জার্নালে কোভ্যাক্সিনের প্রথম দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের রিপোর্টের ভিত্তিতে বলা হয়েছে, ভ্যাকসিনটি নেয়া ৩৭৫ জন স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে কোনো নেতিবাচক প্রভাব দেখা যায়নি। বরং করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।