যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে হারার পর এখন ক্ষমতা হস্তান্তরের শেষ মুহূর্তে এসেও নির্বাচনেরও ফলাফল পাল্টাতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জর্জিয়ার প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তাকে রাজ্যের ফল পাল্টাতে চাপ দিয়েছেন। এমন একটি ফোনালাপ ফাঁস হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প জর্জিয়ার প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তাকে ট্রাম্প পুনর্গননা করে তার পক্ষে ভোটের ফল দেখানোর অনুরোধ করেছেন। জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে ডেমোক্র্যাট জো বাইডেন ১১ হাজার ৭৭৯ ভোট বেশি পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
তাদের দীর্ঘ ফোনালাপের অডিও দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট রোববার প্রথম প্রকাশ করলে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
ফোনালাপের সূত্র ধরে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেক্রেটারি অব স্টেটকে ১১ হাজারের বেশি ভোট কোনোভাবে খুঁজে বের করার জন্য বারবার বলছেন বলে ফোনালাপে শোনা যায়।
ট্রাম্প বলছিলেন, ‘আমি এই একটা জিনিসই চাইছি—কোনোভাবে ১১ হাজার ৭৮০ ভোট খুঁজে বের করা।’ ট্রাম্পের এই চাওয়ার কারণ, তাহলে জো বাইডেনের চেয়ে এক ভোট বেশি হয়ে যাবে এবং জর্জিয়ার নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেছেন, তা প্রমাণিত হবে। এমনিতেই নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেছেন বলে উল্লেখ করেন।
ট্রাম্পের কথার পরিপ্রেক্ষিতে ব্র্যাড রাফেনসপারজারকে বলতে শোনা যায়, ট্রাম্প ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে কথা বলছেন। রাজ্যের ভোট ঠিকই একাধিকবার গণনা করা হয়েছে। এখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথায় নতুন ভোট খোঁজে পাওয়ার কাজ যে তিনি করবেন না, এমন কথা বিনয়ের সঙ্গে বলেন ব্র্যাড রাফেনসপারজার।
ফোনালাপের একপর্যায়ে ওই নির্বাচনী কর্মকর্তাকে এক ধরণের ব্লাকমেইল করার চেষ্টা করেন ট্রাম্প। রিপাবলিকান পার্টির লোকজন ব্র্যাড রাফেনসপারজারের ওপর অসন্তুষ্ট বলে ট্রাম্প উল্লেখ করেন ফোনালাপে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে এমন ব্যবহার রিপাবলিকানরা নাকি মেনে নিতে পারছেন না।
৫ জানুয়ারি জর্জিয়ায় দুই সিনেট নির্বাচনেও এর প্রভাব পড়বে বলে ট্রাম্প উল্লেখ করেন। এখন যদি তার কথামতো সব ঠিক করে নেয়া হয়, রিপাবলিকান পার্টির নেতারা সেক্রেটারি অব স্টেটকে ‘খুবই শ্রদ্ধা’ করবেন বলে ট্রাম্প বলতে থাকেন।
৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে জো বাইডেন ইলেকটোরাল ও পপুলার ভোটেও জয়ী হয়েছেন। কিন্তু ট্রাম্প এখনও তাকে মেনে নেননি। ৬ জানুয়ারি জো বাইডেনকে প্রত্যয়ন করার কথা রয়েছে মার্কিন পার্লামেন্টে। ২০ জানুয়ানি বাইডেনের শপথ নেয়ার কথা রয়েছে।