মোহামেডানের আট মিনিটের ঝড়

খেলাধুলা

৬৮ মিনিটে সুজন মিয়ার নিখুঁত ক্রসে আকবার আলীর চোখ ধাঁধানো হেডে বল চলে যায় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের জালে। লিড নিয়েও তা ধরে রাখতে না পারা সাদাকালো শিবিরে তখন রাজ্যের হতাশা। আর্থিক সংকটে থাকা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের সঙ্গে পা হড়কালেই যে সর্বনাশ হবে মোহামেডানের। সমতা ফেরানো মুক্তিযোদ্ধা চার মিনিট পর প্রায় এগিয়ে যাচ্ছিল। মুক্তির এ আক্রমণ প্রতিহত করার পরই সেরা ছন্দে ফেরে শন লেনের দল। আট মিনিটের মধ্যে তিন গোল করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধার ঘুরে দাঁড়ানোর আশাও শেষ করে দেয় মোহামেডান।

গতকাল ফেডারেশন কাপ ফুটবলে মুক্তিযোদ্ধাকে ১-৪ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পথে এক পা দিয়ে রেখেছে মতিঝিলপাড়ার ক্লাবটি। ৩০ ডিসেম্বর আবাহনী ও মুক্তিযোদ্ধা ম্যাচ ড্র হলেই শেষ আট নিশ্চিত হবে মোহামেডানের। গ্রুপ ‘ডি’তে মোহামেডানকে হারিয়ে শুরু করা আবাহনীর পয়েন্ট এক ম্যাচে ৩। সমান পয়েন্ট মোহামেডানেরও। বাংলাদেশ পুলিশ ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের মধক্যার চার গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচটি ২-২ গোলে সমাপ্ত হয়েছে। এ ম্যাচটি ড্র হওয়ায় গ্রুপ ‘এ’ থেকে কোয়ার্টার নিশ্চিত হয়েছে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পুলিশকে হারানো শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের।

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধে একপেশে খেলা মোহামেডানকে দ্বিতীয়ার্ধে কাঁপিয়ে দেয় প্রধান কোচ ছাড়া খেলতে নামা মুক্তিযোদ্ধা। যদিও প্রথম ৪৫ মিনিট ভালো খেলার ফল হিসেবে গোল পায় সাদাকালো জার্সিধারীরা। ম্যাচের ৪২ মিনিটে। বাঁ পায়ে সোহাগের দারুণ সেট পিস থামানোর কোনো সাধ্য ছিল না মুক্তিযোদ্ধার গোলরক্ষক মাহফুজ হাসান প্রিতমের। বিরতির পর ম্যাচের দৃশ্যপট বদলে যায়। অনেকটা গোছানো ফুটবল খেলা মুক্তিযোদ্ধা একের পর এক আক্রমণ শানাতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় ম্যাচের ৬৮ মিনিটে সুজনের ক্রসে আকবরের গোলে মুক্তির সমতা। এই অর্ধে এলোমেলো হয়ে যাওয়া মোহামেডান লিড নেয় ৭৫ মিনিটে। ম্যাচে ১০টিরও বেশি কর্নার আদায় করা মোহামেডানের এগিয়ে যাওয়ার গোলটিও এসেছে কর্নার থেকে। সোহাগের কর্নারে মুক্তিযোদ্ধার আকবার আলীর মাথা ছুঁয়ে যাওয়া বলে হেড করেন মোহামেডানের উরু নাগাতা। এরপর মাথা ছুঁয়ে বল জালে জড়ান আতিকুজ্জামান। মোহমেডানের শেষ দুটি গোল আসে নাইজেরিয়ান মিডফিল্ডার অ্যাবিওলা নুরাতের পা থেকে ৮০ ও ৮৩ মিনিটে।

আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে শেখ জামাল ও বাংলাদেশ পুলিশের মধ্যকার রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে দু’বার এগিয়ে গিয়েও জিততে পারেনি পুলিশ। ম্যাচের ১০ মিনিটে সতীর্থের কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সের মধ্যে অরক্ষিত থাকা স্বাধীন ঠান্ডা মাথায় গোল করে পুলিশকে এগিয়ে নেন। ৫১ মিনিটে সেই গোল পরিশোধ করে শেখ জামাল। সুলেমন কিংয়ের ডিফেন্সচেরা পাসে গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড ওমর জোবে পুলিশ গোলরক্ষককে পরাভূত করেন। আর ৭৭ মিনিটে আত্মঘাতী গোলে এড়িয়ে যায় পুলিশ। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালেই বল পাঠিয়ে দেন জামালের আরিফুল ইসলাম। এক মিনিট পর সমতা আনেন শেখ জামালের সুলেমন কিং।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *