প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় মনিটরিং করবে

বাংলাদেশ

বাংলাদেশে করোনার ভ্যাকসিন (টিকা) আসবে মূলত দুটি উৎস থেকে। এর মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মধ্যে স্বাক্ষরিত এক ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী তিন কোটি ডোজ টিকা পাবে বাংলাদেশ। এছাড়া কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি গ্যাভি থেকে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশের জন্য। মহামারী মোকাবেলায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মী, ফ্রন্টলাইনার বা সম্মুখ সারির কর্মী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠী, বয়োজ্যেষ্ঠ জনগোষ্ঠী, দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী, শিক্ষাকর্মী ও গণপরিবহন কর্মীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ ভ্যাকসিন দেয়া হবে।

দেশের ২৫ লাখ মানুষকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথম পর্যায়ে করোনার ভ্যাকসিন দেয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার। এজন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সহায়তায় একটি তালিকা করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তালিকাটি নিয়মিত মনিটরিং করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স¤প্রতি করোনা ভ্যাকসিন ব্যবহার পরিকল্পনা সংক্রান্ত একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সারা দেশে টিকাকেন্দ্র রয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার। এসব টিকাদান কেন্দ্রের বিদ্যমান জনবল কাঠামো দিয়ে মাসে ৫০ লাখ লোককে টিকা দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। এছাড়া বাংলাদেশী টিকাদাতা কর্মীরা টিকাপরবর্তী ঝুঁকি, ব্যবস্থাপনা, কোল্ড চেইন মনিটরিং, টিকা কার্ড তৈরি ও রেকর্ড সংরক্ষণ ইত্যাদি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কেও যথেষ্ট ওয়াকিবহাল রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে করোনা ভ্যাকসিন ব্যবহার পরিকল্পনা সংক্রান্ত সভাটি অনুষ্ঠিত হয় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে। ওই সভার কার্যবিবরণী এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

বৈঠকে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, গ্যাভি বিভিন্ন উৎস থেকে কভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন সংগ্রহ করবে। গ্যাভি থেকে পাওয়া ভ্যাকসিন প্রদানের ক্ষেত্রে একই ব্যক্তি যাতে একই কোম্পানির দুই ডোজ টিকা পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ভ্যাকসিন প্রদানের সময় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা প্রয়োজন হবে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, তালিকায় অন্তর্ভুক্তদের নিয়ে একটি ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে। যারা ভ্যাকসিন পাবে তাদের কবে, কোন কেন্দ্রে ভ্যাকসিন দেয়া হবে তা মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে হবে। ভ্যাকসিনটি পরিবহনের ক্ষেত্রেও পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে, যাতে কোন জেলায় কখন ভ্যাকসিন যাবে, তা আগে থেকেই সংশ্লিষ্ট সবাই অবগত থাকেন। ওয়েস্ট ডিসপোজালের জন্য একটি গাইডলাইন তৈরি করতে হবে। একই সঙ্গে গুজব প্রতিরোধে মনিটরিং ও প্রতিদিন ব্রিফিংয়ের আয়োজন করতে হবে। অন্যদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দুই মাস ধরে কভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ব্যবস্থাপনা নিয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করছে। টিকাদান কর্মীরা এ কাজে দক্ষ ও পারদর্শী। বাংলাদেশের সব মানুষ পর্যায়ক্রমে এ ভ্যাকসিন পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *