চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে অংশ নিলে দল থেকে সরাসরি বহিস্কার করা হবে এমন কঠোর হুঁশিয়ারির পরও আওয়ামী লীগের ১২ জন বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচন করতে চাইছেন। এসব বিদ্রোহী প্রার্থীর অভিযোগ, সাংগঠনিক স্বার্থকে প্রাধান্য না দিয়ে দুঃসময়ের কর্মীদের বঞ্চিত করে ব্যক্তি স্বার্থে চসিক নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তাদের দাবি, শুরু থেকেই তাদের ব্যাপারে দল কঠোর অবস্থানের কথা বলে আসলেও করোনাকালে তাদেরকে নিয়েই বিভিন্ন দলীয় ও সামাজিক কর্মসূচি পালন করেছে মহানগর আওয়ামী লীগ।
অথচ গত ১৮ ও ১৯ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ চট্টগ্রাম সফরকালে কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিষ্ক্রিয় থাকার নির্দেশ দেন। কেউ দলের নির্দেশনা না মানলে বহিষ্কার করা হবে বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি। কিন্তু এসব নির্দেশ কেউ যেন মানতে চাইছে না। এসব বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাউন্সিলর পদে দলের ১নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে তৌফিক আহমেদ চৌধুরী, ২ নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ডে সাহেদ ইকবাল বাবু, ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে জহুরুল আলম জসিম, ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডে মোরশেদ আকতার চৌধুরী, ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ডে সাবের আহমেদ, ১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ডে এফ কবির মানিক, ২৫ নম্বর রামপুরা ওয়ার্ডে এসএম এরশাদ উল্লাহ, ২৭ নম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ডে এইচ এম সোহেল, ২৮ নম্বর পাঠানটুলী ওয়ার্ডে আবদুল কাদের, ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ডে হাসান মুরাদ বিপ্লব মাঠে সক্রিয় আছেন।
এ বিষয়ে দলের ভাষায় ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী মোরশেদ আক্তার চৌধুরী ভোরের কাগজকে বলেন, দলের দুঃসময়ে জেল জুলুমের শিকার হয়েছি, আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। আমরা দুঃসময়ের কর্মী। কিন্তু আমাদের জনসমর্থন আছে। মনোনয়ন দেয়ার সময় মহানগর আওয়ামী লীগ বা তৃণমূলের মতামত নেয়া হয়নি। জনগণের চাওয়া-পাওয়া, অধিকার-আবদার আমাদের ওপরই। জনগণও আমাদেরকে চায়। নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার কোনো উপায় তো আমি দেখছি না।
নির্বাচন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে কাউন্সিলর প্রার্থী জহুরুল আলম জসিম ভোরের কাগজকে বলেন, নির্বাচন করার জন্য এলাকাবাসীর চাপ ও সমর্থন দুটোই আছে। আমরা সম্মিলিত হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফের সঙ্গে দেখা করেছি। আমরা তাকে বোঝাতে চেষ্টা করেছি যাদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তাদের যাচাই বাছাই করে দেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে হাসান মুরাদ বিপ্লব ভোরের কাগজকে বলেন, করোনাকালে দলের সব কর্মসূচিতে আমরা ছিলাম। করোনার সময়ে আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েছি, মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। এসব করতে গিয়ে আমি করোনায় আক্রান্ত হয়েছি। আমি তো মারাও যেতে পারতাম। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও মানসিকভাবেও অপদস্থ হয়েছি। পিছপা হওয়ার কোনো সুযোগ আমাদের নেই।