জয়পুরহাটের বাস-ট্রাক সংঘর্ষে ১২জন নিহতের রেস কাটতে না কাটতে এবার দিনাজপুরের ফুলবাড়িতে ট্রেন-ট্রাক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সুশান্ত কুমার দাস (৩২) নামে এক গেটম্যান নিহত হয়েছেন। জয়পুরহাটে গেটম্যান ঘুমিয়ে থাকায় বড় দুর্ঘটনা ঘটে। আর ফুলবাড়িতে ট্রেনের লোকো মাস্টার সিগন্যাল অমান্য করে স্টেশনে ঢুকে পড়ে। আর এতেই ঘটে দুর্ঘটনা।
সোমবার (২১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১টায় ফুলবাড়ি পৌর শহরের রেলঘুণ্টি নামকস্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর প্রায় ৫ ঘণ্টা রেল যোগাযোগ বন্ধ ছিল। ভোর ৭টায় নিহত সুশান্তের লাশ দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাকের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়।
নিহত গেটম্যান সুশান্ত কুমার দাস ঈশ্বরদী জেলার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় ঘাতক ট্রাক চালক সাইদুল ইসলামকে (৩৪) আটক করেছে পুলিশ। ট্রাক চালক সাইদুল ইসলাম নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার কফিলউদ্দিন মন্ডলের ছেলে।
ফুলবাড়ি রেলওয়ে স্টেশনের সুপার ইসরফিল সরকার জানান, দিবাগত রাত ১টা ৪ মিনিটে বিরামপুর থেকে ২৩ আপ একটি মালবাহী ট্রেন ফুলবাড়ি স্টেশনের ১নং লাইনে প্রবেশ করে। কিন্তু এর ১ মিনিট পরে ১টা ৫ মিনিটে স্টেশনের অনুমতি না নিয়ে এমজিবিসি নামক আরেকটি ট্রেন স্টেশনের ১নং লাইনে প্রবেশের চেষ্টা করে। ট্রেনটি পার্বতীপুর থেকে মাল নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিল। এ সময় স্টেশন থেকে ৫০০ গজ উত্তর দিকে ফুলবাড়ি রেলঘুন্টি নামকস্থানে ঠাকুরগাঁও থেকে বগুড়াগামী চাল বোঝাই ট্রাকটি (ঢাকা মেট্রো-ট-১৪-৯৭১৩) স্বজোরে ট্রেনটিকে ধাক্কা দেয়।
দুর্ঘটনার সময় ওই এলাকায় প্রচণ্ড কুয়াশা ছিল। এতে ট্রাকটি ছিটকে রাস্তার সাইডে গিয়ে পড়ে। এসময় ট্রাক চালক সাইদুল ইসলাম সামান্য আহত হন। আজ মঙ্গলবার ভোর ৭টায় ক্রেন যোগে দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাকটি সড়ানোর সময় ট্রাকের নিচে গেইট কিপার সুশান্ত কুমার দাসের লাশ পাওয়া যায়।
দুর্ঘটনার পর থেকে ওই রেল লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। ভোর ৬টা ১০ মিনিটে মালবাহী ট্রেনটি লাইন থেকে সরিয়ে নেয়ার পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
তিনি আরো জানান, যেহেতু এমজিবিসি ট্রেনটি স্টেশনে প্রবেশের অনুমতি ছিল না, তাই গেইট কিপার রেলগেইট সিগন্যালটি নামায়নি। সেই সময় ওই রেলগেইট দিয়ে কোন ট্রেন যাওয়ার কথা ছিল না। ট্রেন চালকের ভুলের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল বলে প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি। যদি এমজিবিসি ট্রেনটি ষ্টেশনের ১নং লাইনে প্রবেশ করতো তাহলে একটা বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতো বলে তিনি জানান।