গত বছর ৯ মার্চ পারিবারিক আয়োজনে বাগদান হয় চিত্রনায়িকা তমা মির্জা ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক হিশাম চিশতির। আর সে বছরই মে মাসে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তারা। বিয়ের পর স্বামীকে নিয়ে দুবাই, কানাডাসহ বেশ কয়েক দেশে ঘুড়ে বেড়িয়েছেন এই দম্পতি। সব কিছু ভালোই চলছিল। কিন্তু গতকাল শুক্রবার প্রকাশ্যে আসে বেশ ক’দিন ধরেই তাদের মধ্যে বনিবনা হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, বিষয়টি পৌঁছেছে থানা ও মামলা পর্যায়ে।
জানা যায়, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই চিত্রনায়িকার বিরুদ্ধে তার স্বামী হত্যাচেষ্টার মামলা করেছেন। তবে তমা মির্জা বলছেন, ভিন্ন কথা। তার ভাষ্য, ‘প্রতিটি সংসারেই টুকটাক সমস্যা হয়। সেটি আবার নিজেদের মধ্যেই মিট হয়ে যায়। আজ অনেকদিন ধরে ওর সঙ্গে আমার নানা বিষয় নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। এক পর্যায়ে সে আমার কাজে যৌতুক চেয়েছে। বিষয়টি প্রথমে আমি আমলে নেইনি। কিন্তু দেখলাম, দিন দিন সে যৌতুকের জন্য আমাকে চাপ দিচ্ছে। মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করা শুরু করেছে। তাই বাধ্য হয়ে মাসখানেক আগে আমি বাড্ডা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরপর থেকে সে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যায় আমার ওপর। লোকজন নিয়ে আমার বাসায় এসে হুমকি-দামকি দেওয়া শুরু করে। গত ৫ ডিসেম্বর সে লোকজন নিয়ে আমার বাসায় এসে হট্টগোল শুরু করে। আমাকে ও আমার বাবার শরীরে হাত তোলে। উপায় না দেখে আমি ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেই। এরপর পুলিশ আসে, পুলিশের সামনেও সে দুর্ব্যবহার করে। এরপর পুলিশই আমাকে তার বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য বলে। পরদিন আমি তার বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় যৌতুক, নারী নির্যাতন ও সাইবার ক্রাইমে মামলা করি। বিষয়টি পারিবারিকভাবে মীমাংসা করা হবে বলে ওর বোন আমাদের জানায়। তাই এ বিষয়ে কারও সঙ্গে কোন কথা বলিনি। কিন্তু সেটি না করে তারা উল্টো আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের নামে মিথ্যা মামলা করেছে। মামলার পরই সে কানাডায় চলে গেছে।’
হিশাম চিশতির অভিযোগ, আপনারা তার কাছ থেকে মোট ২০ লাখ টাকা ধার নিয়েছেন। আর সেটি ফেরত দেওয়ার নামে টালবাহানা করছেন। একপর্যায়ে টাকা দেওয়ার নামে তাকে আপনার বাসায় ডেকে মারধর করেছেন?
এর উত্তরে তমা মির্জা বলেন, ‘২০ লাখ টাকার অংকটা সে উল্টো সাজিয়েছে। সে আমার কাছ থেকে যৌতুকের জন্য ২০ লাখ টাকা দাবি করে। মেয়ের সুখের কথা ভেবে বাবা বিভিন্ন সময়ে ওকে ১০ লাখ টাকা দেয়। ওদিন (৫ ডিসেম্বর) বাকি ১০ লাখ টাকার জন্য সে আমার বাসায় আসে। টাকা দিতে অস্বীকার করায়, আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করে। পরে বাধ্য হয়েই আমি প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে ৯৯৯ ফোন দেই।’
‘আমিও আসামি, সেও আসামি। সে যদি নিরাপরাধ হতো তবে কেন কানাডায় চলে গেল। সে আমাকে ও আমার পরিবারকে ফাঁসানোর জন্যই এই মামলা করেছে,’ যোগ করেন তমা মির্জা।