মমতার আসনে জিতলেই তিস্তা চুক্তি!

আন্তর্জাতিক

ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশের সরকার ২০১১ সালে তিস্তার পানিবণ্টনের প্রশ্নে অন্তর্বর্তী চুক্তিতে রাজি হয়েছিল। সেটি এবার দ্রুত স্বাক্ষর করার দিকে জোর দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জবাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, ভারত সরকারের ধারাবাহিক প্রয়াস চলছে। এ ব্যাপারে ভারতের প্রতিশ্রুতি অটুট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরে মধ্যেকার অনুষ্ঠিত গত ১৭ ডিসেম্বরের বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে,  পশ্চিবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যয়ের প্রস্তাবিত বিকল্প তিস্তা চুক্তির সাথে বাংলাদেশ তো নয়ই, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারও একমত নয়। বরং দু’দেশের সম্মতিতে হওয়া ২০১১ সালের চুক্তিটি বাস্তবায়নে মোদী সরকার ধারাবাহিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদীর বৈঠক ও যৌথ বিবৃতির পর দেশ দু’টির রাজনৈতিক অঙ্গণে আলোচনা উঠেছে, তৃণমূলকে হটিয়ে রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলেই তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১১ সালে তিস্তা চুক্তিতে সম্মতির পরও তা বাস্তবায়ন হয়নি। ২০১৭ সালে শেখ হাসিনা ভারত সফরকালে তিস্তা চুক্তির বিকল্প পানিবণ্টন চুক্তি প্রস্তাব করেছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেই প্রস্তাবে- তোর্সা-জলঢাকা-রায়ডাক নিয়ে নদী কমিশন গড়ে তোলার কথা বলা হয়। তবে বাংলাদেশ বরাবরই বলে আসছে- তিস্তা ও তোর্সার অববাহিকা এক নয়। এছাড়া ভূ-প্রকৃতিগত কারণে তোর্সার পানি বাংলাদেশে আনাও সম্ভব নয়। ফলে তোর্সা, জলঢাকা বা রায়ডাকে ভারত অতিরিক্ত পানি দিলেও তিস্তার দুর্দশা ঘুঁচবে না।

বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, আসন্ন বিধানসভার ভোটই ঠিক করবে তিস্তার পানি কোন দিকে গড়াবে। কিন্তু মোদী সরকার চাই না, তিস্তাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ছিদ্র দিয়ে ড্রাগন হয়ে চীন ঢুকে পড়ুক। কারণ এরই মধ্যে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রায় ১০০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে। চীনের পক্ষ থেকে ঋণের অর্থে তিস্তা অববাহিকার সামগ্রিক পরিচালন ব্যবস্থা এবং তিস্তা নদীর বিভিন্ন প্রকল্প পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হচ্ছে।

ফলে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যসভা দখলে নিতে পারলেই বিজেপি কংগ্রেস সরকারের তিস্তা চুক্তি চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়ন করবে বলে ব্যাপক সম্ভাবনার কথা বলছেন দু’দেশের বিশ্লেষকরা। ২০১১ সালে বাংলাদেশ সফরকালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে একমত হন। তবে মমতা বন্দোপাধ্যয়ের একক বাধার মুখে ঝুলে যায় চুক্তি স্বাক্ষর। যা এখনও ঝুলেই আছে। সূত্র: আনন্দবাজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *