এটিএন বাংলায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর রাত ৮.৪৫ মিনিটে প্রচার হবে নাটক ‘মুক্তি’। মাসুম শাহরীয়ারের রচনায় নাটকটি পরিচালনা করেছেন শফিউল আলম বাবু। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শতাব্দী ওয়াদুদ, নিশাত প্রিয়ম, সিফাত, সাইফ মাহমুদ, ইশরাক আফ্রিদ অন্তিক ও শফিউল আলম বাবু।
অন্ধকার ঘরে একা একা বসে থাকে মেঘনা। লোহার শিক দেয়া জানালার বাইরে চাদের আলো। কড়িডোরে বুটের শব্দ। বুটের শব্দটা এসে থেমে যায় দরজায়। তারপর ক্যাচক্যাচ করে দরজাটা কেউ খোলে। হ্যাজাক লাইটের আলো এসে পড়ে মেঘনার ভীত সন্ত্রস্ত চেহারায়। … এই স্বপ্ন দেখে মেঘনার ঘুম ভাঙে। একটা সিনেমায় শ্যুটিং চলছে এখানে। মেঘনা জনপ্রিয় অভিনেত্রী। শ্যুটিং লোকেশনের পাশে একটা বাড়িতে মেঘনার থাকার ব্যবস্থা। ছবিতে মেঘনা একজন বীরাঙ্গনা নারীর চরিত্রে অভিনয় করছে। তাকে নিয়েই গল্প। অথচ চরিত্রের অনুভুতিটা ধরতে পারছে না সে। পরিচালক বার বার বলছিলো, অপমানিত চেহারায় অসহায় এক ধরনের ক্রোধ চাই মেঘনা। মেঘনা সেটা পারছিলো না। ঘুম ভাঙতেই প্রোডাকশন ম্যানেজার এসে তাড়া দেয় মেঘনাকে। এ বাড়িতে মেঘনার দেখাশোনা করে গ্রামেরই একটা মেয়ে। মেয়েটির নাম শিউলি। স্কুল কম্পাউন্ডে সেট ফেলা হয়েছে একটা দৃশ্যের। যে দৃশ্যে এক রাজাকার মেঘনাকে ধরে নিয়ে আসে। পাকিস্থানী এক কমান্ডারের হাতে তুলে দেয়। মেজর মেয়েটার দিকে এগিয়ে এসে তার হাতটা খপ করে ধরে। মেয়েটা ছটফট করে। হঠাৎ ভীড়ের মধ্যে দাড়িয়ে থাকা শিউলির চোখে মুখে ফুটে ওঠে ক্রোধ। সেখান থেকে দৌড়ে পালায়। মেঘনা সেটা খেয়াল করে।
গ্রামের বড় ব্যাপরী আমজাদ খুব অমায়িক ভদ্রলোক। তার গ্রামে শুটিং হচ্ছে। তারই বাড়িতে থাকার আয়োজন হয়েছে পুরো শুটিং দলের। কাজেই সে খুব আহলাদিত এবং গর্বিত। কথায় কথায় মেঘনার ব্যাপারে তার ইঙ্গিত পূর্ন আগ্রহও দেখায়। অন্যদিকে শিউলির সঙ্গে কথায় কথায় মেঘনা জানতে পারে, ব্যাপারী লোকটা দিনের পর দিন তার উপর অনাচার করেছে। সে কাউকে কিছু বলতে পারছে না। মেঘনা শিউলিকে বলে, তুমি এই লোকটার বাড়িতে কাজ করো? তোমার রাগ লাগে না। প্রতিশোধ নিতে ইচ্ছা করে না? শিউলির অসহায় কান্না ভেজা উচ্চারন, ‘কিভাবে? কেমন করে?’ মেঘনার খুব রাগ হয়। অসহায় রাগ।
মেঘনা পরিচালক এবং ইউনিটের লোকদের সঙ্গে কি কি কথা বলে। তারপর দেখি ইউনিটের একটা ছেলে আমজাদ ব্যাপারীকে ডেকে নিয়ে আসে। আমজাদ ব্যাপারী মেঘনার ঘরে ঢোকে। … মেঘনা হাসিমুখে এগিয়ে যায়। বলে, সিম্পলি ভালোবাসা আমার পছন্দ নয় ব্যাপারী, আমাকে পেতে হলে তোমার জোর করতে হবে। আমি অভিনেত্রী জানোতো। তাই অভিনয় পছন্দ করি। ব্যাপারী হেসে এগিয়ে যায় মেঘনার দিকে। মেঘনার উপর ঝাপিয়ে পড়ে। জোর করে। এসময় হঠাৎ মেঘনার চিৎকার এবং ইউনিটের লোকেরা এসে আমজাদকে ধরে পিটাতে থাকে। মেঘনা তীব্র আক্রোশ নিয়ে ব্যাপারীকে চড় মারে। পরদিন সকালে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয় ব্যাপারীকে। শিউলি শ্যুটিং দলের সঙ্গে ঢাকায় রওনা করে।