প্রথম ডোজ নেয়ার ১০ দিন পর কাজ করে ফাইজার ও বায়োএনটেকের টিকা

বাংলাদেশ

প্রথম ডোজ গ্রহণের ১০ দিন পর থেকে কাজ করা শুরু করে ফাইজার ও বায়োএনটেকের করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) বিরোধী টিকা। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) প্রকাশিত নতুন নথিপত্রে এমনটা দেখা গেছে। টিকাটি ব্যবহারের জন্য জরুরি অনুমোদন দেয়া বিষয়ক এক বৈঠকের আগ দিয়ে টিকাটির কার্যকারিতা শুরুর বিষয়ে এ তথ্য প্রকাশ করা হলো। এ খবর দিয়েছে দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।
খবরে বলা হয়, এফডিএ’র নথিপত্র অনুসারে, টিকাটি গড়ে ৯৫ শতাংশ কার্যকর। তবে ৫৫ বছরের বেশি বয়স্কদের ক্ষেত্রে কার্যকারিতার হার গড়ে ৯৩.৮ শতাংশ। নথিপত্রগুলোয় আরো দেখা যায়, টিকাটি গ্রহণের এক সপ্তাহ পর থেকেই গ্রহণকারীদের দেহে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ স্তিমিত হতে থাকে। ধারণা করা হচ্ছে, টিকাটি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হলে যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালগুলোয় করোনা রোগীদের চাপ কমবে।
বৃহস্পতিবার টিকাটি জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠক করার কথা রয়েছে বিশেষজ্ঞদের। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে টিকাটির অনুমোদন দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে এফডিএ।
নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি জানতে চায়, টিকাটি ১৬ বছর ও তার বেশি বয়সীদের করোনা আক্রান্ত হওয়া থেকে বিরত রাখতে পারার মতো প্রমাণ রয়েছে কিনা ও এর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার চেয়ে উপকারিতা বেশি কিনা। উল্লেখ্য যে, বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ মানতে বাধ্য নয় এফডিএ।
তবে বেলর কলেজ অব মেডিসিনের টিকা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ পিটার হোটেজ জানান, খুব সম্ভবত টিকাটি ব্যবহারের অনুমোদন পেতে চলেছে। তিনি জানান, এফডিএ বিশেষজ্ঞ দলটিকে টিকাটি মূল্যায়ন করতে পাঠানো অনেকটা সে ইঙ্গিতই দেয়। হোটেজ আমার মনে হয় না, তারা ব্যর্থ হওয়ার জন্য দলটিকে পাঠাচ্ছে।
করোনা থেকে সুরক্ষা পাওয়ার জন্য কোনো ব্যক্তিকে ফাইজার অথবা বায়োএনটেকের টিকার দুই ডোজ নিতে হবে। হোটেজ জানান, প্রথম ডোজের পর থেকেই টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। তবে অবশ্যই সবাইকে উভয় ডোজ নিতে হবে।
এদিকে, বৃটেনে ইতিমধ্যে টিকাটির প্রয়োগ শুরু হয়ে গেছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ৯০ বছর বয়সী এক নারীর শরীরে সর্বপ্রথম টিকা প্রয়োগ করা হয় সরকারি উদ্যোগে। তবে টিকাটি প্রয়োগে তাড়াহুড়া করায় বৃটেনের সমালোচনা করেছেন কয়েকজন মার্কিন বিশেষজ্ঞ।
এফডিএ’র নথিপত্র অনুসারে, ওজন, জাত, বয়স টিকাটির কার্যকারিতার উপর তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি। সকল ক্ষেত্রেই টিকাটির কার্যকারিতা বেশ ভালো দেখা গেছে। অবশ্য শিশু, প্রসূতী নারী ও কম প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের উপর টিকাটি কেমন কাজ করতে তা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নয়।
টিকাটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে ইনজেকশন প্রবেশ করার জায়গায় ব্যথা, ক্লান্তি ও মাথাব্যথাই সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে গ্রহণকারীদের মুখে পেশি দুর্বলতাও দেখা গেছে। কিন্তু এমন গ্রহণকারীর সংখ্যা বেশি নয়।
ফাইজারের টিকাটি যুক্তরাষ্ট্রে ৪৪ হাজার মানুষের উপর পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেককে প্লাসেবো ও অর্ধেককে সত্যিকারের টিকা দেওয়া হয়েছে। প্লাসেবো গ্রহণকারীদের মধ্যে চারজন ও টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে দুই জন মারা গেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *