জনপ্রিয় হয়ে উঠছে আগাম জাতের ব্রি ৭৫ ধান

বাংলাদেশ
 

গতানুগতিক আমন ও ব্রি ৭৫ জাতের অন্যান্য ধানের চেয়ে সুগন্ধীযুক্ত অধিক ফলনশীল আগাম জাতের ব্রি ৭৫ ধানে চাষে কৃষকের ভাগ্য বদলে দিতে পারে। এতে করে কৃষকের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হওয়ার সাথে সাথে দেশের কৃষি নির্ভর অর্থনীতি কে করতে  পারে শক্তিশালী। বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইন্সটিটিউট গাজীপুরের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত ব্রি-৭৫ জাত ধানের ফলন ও বৈশিষ্ঠ্য দেখে অন্যান্য স্থানের মত পাঁচবিবির কৃষকদের মাঝেও এই ধান চাষে ধীরে ধীরে আগ্রহ বেড়ে চলেছে। আর এর জন্য নিরলস ভাবে কাজ করছেন পাঁচবিবি উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে পাঁচবিবি কৃষি অফিসের সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞ উপ সহকারীগণ।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ব্রি ৭৫ ধানের সাথে অন্যান্য জাতের ধানের পার্থক্য হলো ঐ সব ধানের যেখানে রোপন শুরু থেকে কর্তনের সময় লাগে ১৪০ থেকে ১৫০ দিন সেখানে এই ধানের লাগে মাত্র ১১০ দিন। এর ফলে অন্য ধানের চেয়ে ১ মাস আগেই এই ধান কেটে কৃষকের উক্ত জমিতে সহজেই শীতকালীন ফসল আলু,সরিষা,কালাই সহ অন্যান্য কৃষি পন্য আবাদ করে অধিক লাভবান হতে পারবে।  ব্রি ৭৫ ধান গাছের উচ্চতা ৩ থেকে সাড়ে ৩ ফুট শক্ত কান্ড বা ডাঁটা হয়ে থাকে।
ফলে বাতাসে সহজে হেলে পড়ে না। রোগ বালাইও কম। শতকরা ২০ ভাগ কম সারে এই ধান চাষ করা হয়। ধান হয় মাঝারি চিকন। এই জাতের ধানের চালের ভাত হয় হালকা সুগন্ধীযুক্ত।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহ আলমগীর জানান, প্রতি বিঘাতে ব্রি ৭৫ ধান ১৮ থেকে ২০ মন হয়ে থাকে। ২১ থেকে ২৫ দিন বয়সী চারা দিয়ে রোপন করা যায়। এছাড়া আগাম জাতের ধান হওয়াতে এ সময় সাধারণ গো-খাদ্য কম সংকট দেখা দেওয়ার কৃষকেরা এই ধানের খড় বিক্রয় করে প্রচুর লাভবান হতে পারে।
পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৩০ বিঘা প্রদর্শনী প্লট সহ আরো ১০ বিঘায় চাষীরা এই জাতের ধান চাষ করেছেন। প্রদর্শনী প্লটে দেখা যায় বাতাসে দোল খাওয়া চোখ জুড়ানো লম্বা শীষের ধানগুলো কাটার অপেক্ষায়। প্রদর্শনী প্লটের চাষী আওলাই ইউনিয়ের কাঁকড়া গ্রামের আব্দুল ওহাব জানান, এই ধানের তেমন রোগ-বালাই নেই। উৎপাদন খরচ কম হয়েছে। তবে আগাম জাতের হওয়ার কারণে জমিতে গান্ধী পোকা ও ইঁদুরের কিছুটা উপদ্রপ হতে পারে। তার মতে এ জাতের ধান চাষ ব্যাপক করা হলে দেশের কৃষি অর্থনীতি বদলে যেতে পারে। বদলে যেতে পারে কৃষকের ভাগ্যও।
কৃষিবিদ লুৎফর রহমান বলেন, উপজেলার কৃষকদের মাঝে ধীরে ধীরে ব্রি ৭৫ ধান চাষের আগ্রহ বাড়ছে। আগামী বছরে এই ধান চাষ আরো বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *