সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগে ট্রাম্পের জয়

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সপ্তাহ খানেক আগে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হলেন অ্যামি কোনে ব্যারেট। সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি হিসেবে তার নিয়োগ চূড়ান্ত করলো সিনেট, যেটাকে নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য একটি বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। ৫২-৪৮ ভোটে রিপাবলিকানরা নতুন বিচারপতি অ্যামি কোনে ব্যারেটের নিয়োগ নিশ্চিত করেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউজে ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতিতে বিচারক হিসেবে অ্যামি কোনে ব্যারেট তার শপথ নেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ক্ল্যারেন্স থমাস তার শপথ পাঠ করান। এই নিয়োগ সামনের দিনগুলোতে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে রক্ষণশীলদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত হবে।

অ্যামি কোনে ব্যারেটের এই নিয়োগের বিপক্ষে ভোট দেওয়া একমাত্র রিপাবলিকান হচ্ছেন- সেনেটর সুশান কলিন্স। মেইনের পুনঃনির্বাচনে তিনি কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে যাচ্ছেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মনোনয়ন দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের তৃতীয় বিচারপতি অ্যামি কোনে ব্যারেট। এর আগে ২০১৭ সালে নেই গোরসাচ এবং ২০১৮ সালে ব্রেট কাভানাকে মনোনয়ন দেন তিনি। গত মাসে ফেডারেল আপিল বিভাগের বিচারক রুথ ব্যাডার গিন্সবার্গ মারা গেলে বিচারপতিদের একটি পদ শূন্য হয়।

ডেমোক্র্যাটরা দাবি করেন, ৩ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যারা জিতবেন তারাই বাছাই করবেন নতুন বিচারক। সিনেটের ভোটাভুটির আগে ডেমোক্র্যাটদের নেতা চাক শুমার বলেন, তারা লড়াই থামাবেন না। কিন্তু তাদের কাছে এই নতুন বিচারক নিয়োগ থামানোর কোনো উপায় ছিল না।

কে এই অ্যামি কোনে ব্যারেট

# গর্ভপাত ও সমকামি বিবাহ নিয়ে আপত্তি থাকায় সোশ্যাল কনজারভেটিভরা তাকে পছন্দ করেন।

# একজন ক্যাথোলিক; তবে তার দাবি, ধর্মবিশ্বাস তার বিচারকে প্রভাবিত করে না।

# ইন্ডিয়ানায় বাস করেন, তার সাত সন্তান যাদের মধ্যে দুজনকে তিনি হাইতি থেকে দত্তক নিয়েছেন।

কী হয়েছিল হোয়াইট হাউজে

পেনসিলভ্যানিয়ায় নির্বাচনী প্রচারনা থেকে ফিরেই বিচারক ব্যারেটের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দক্ষিণ লনে আয়োজিত হয় এই শপথ অনুষ্ঠান। ঠিক এক মাস আগে প্রেসিডেন্টের মনোনীত বিচারক হিসেবে অ্যামি কোনি ব্যারেটের নাম ঘোষণা করা হয়। যার পরপরই কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হন ট্রাম্প।

ট্রাম্প বলেন, এটা আমেরিকার জন্য একটা ঐতিহাসিক দিন। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের জন্য ও সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ আইনের শাসনের জন্য এটা বিশেষ কিছু।

যুক্তরাষ্ট্রের আইন নিয়ে যারা পড়ালেখা করেছেন তাদের মধ্যে ব্যারেট সবচেয়ে মেধাবীদের একজন। দেশের সর্বোচ্চ আদালতে তিনি দারুণ কাজ করবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন ট্রাম্প।

আসছে দিনে কী নিয়ে কাজ করবেন বিচারপতি ব্যারেট

বেশ কয়েকটি ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন বিচারপতি ব্যারেট। যার মধ্যে একটি অ্যাফর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট, যা ওবামার আমলের একটি স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত আইন। এটি ওবামাকেয়ার নামেও পরিচিত। এ ছাড়া ১৯৭৩ সালে পুরো আমেরিকায় গর্ভপাত সম্পর্কিত যে আইন পাশ হয়েছিল সেটাও বাতিল হতে পারে এই বিচারপতির আমলে। বিচারপতি ব্যারেটের আগের নানা লেখালেখি থেকে এই আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন লিবারেলরা।

নর্থ ক্যারোলিনা ও পেনসিলভ্যানিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ব্যালট ভরার সময়সীমা নিয়েও সিদ্ধান্ত নিতে হবে এই নতুন বিচারপতিকে। এর আগে সুপ্রিম কোর্ট উইসকনসিন রাজ্যে নির্দিষ্ট সময়সীমার পরে ভোটগ্রহণ বাতিল করেছে। এই রাজ্যও হোয়াইট হাউজে যাওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *